নিজস্ব সংবাদদাতা: কয়লা পাচার চক্রে গ্রেপ্তার করা হল বাঁকুড়া থানার বড়বাবু তথা ইন্সপেক্টর ইনচার্জ (IC) অশোক মিশ্রকে। রবিবার কয়লাপাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের এই অধিকারিককে। তাঁর সঙ্গে তৃনমূলের পলাতক নেতা কয়লাকাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের সূত্র পেয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে একটি মহল থেকে। দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল ওই অধিকারিককে।
উল্লেখ্য তৃনমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ট
কয়লাকান্ডের অন্যতম মাথা বিনয় মিশ্রের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এই অশোক মিশ্র। পুলিশের সঙ্গে টাকা লেনদেনের দায়িত্বে ছিলেন অশোক বলে ইডি সূত্রে খবর। অশোকের গাড়িতেই পাচারের টাকা কলকাতায় আসত। সূত্রের খবর ২০২০ সালের গত এপ্রিল মাসে অশোক ও বিনয়ের সাক্ষাত হয়। দেশ ছাড়ার আগে অশোকের সঙ্গে দেখা করেন বিনয় বলে জানাচ্ছে ইডি। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছেন এই অশোক ও বিনয় মারফৎ ৯০০কোটি টাকা পৌঁছেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আইন আইনের পথে চলবে, কিন্তু কোন সময়ে এদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, সেটা ভাববার বিষয়। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, অথচ ইডি বা সিবিআইয়ের মত সংস্থাকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানো হচ্ছে, যেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তৃনমূলের দাবি বিজেপি নির্বাচনের সময় ইডি, সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে। ঠিক যেমনটা প্রথম দফা ভোটের পরই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA ছত্রধর মাহাতকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে, কয়লা কান্ডে লালাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে খবর। সোমবার লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সিবিআইয়ের তরফে। তাঁর জিজ্ঞাসাবাদে অশোক মিশ্রের ভূমিকা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
বিধানসভা ভোটের মুখে গরু ও কয়লা পাচার কান্ড নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে সিবিআই৷ ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা৷ তদন্তে যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের নাম উঠে এসেছে তদন্তকারী আধিকারিকদের হাতে। এরপর থেকে একাধিকবার বিনয়কে তলব করা হলেও জেরার মুখোমুখি হয়নি সে।এমনকি যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ মিশ্রকেও তলব করা হয়। এমনকি লুক আউট নোটিশ জারি করে সিবিআই৷ কিন্তু সেও তদন্তে কোনও সহযোগিতা করেননি বলেই জানা যায়। এরপরেই গ্রেফতার হল তাঁকে৷ ফোনের টাওয়ারের লোকেশন ধরে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে ইডি। ভাই গ্রেফতার হলেও, বিনয় এখনও বেপাত্তা।
বিধানসভা ভোটের মুখে গরু ও কয়লা পাচার কান্ড নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে সিবিআই৷ যার তদন্তে নেমে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে। যার জেরে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অভিষেক পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছেন অভিষেক পত্নীর ব্যংককের পাশ বইয়ে প্রচুর বেআইনি লেন দেন হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে অশোক, বিনয়, বিকাশের হাত ধরে সেই লেনদেনের উৎসে পৌঁছাতে চাইছে ইডি। উল্লেখ্য শনিবারই ইডি তৃনমূল নেতা কুনাল ঘোষ ও সাংসদ শতাব্দী রায়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথা ঘোষণা করেছে।