নিজস্ব সংবাদদাতা: শালবনী থানার ভাদুতলার জঙ্গলে কার্যত দাবানল ছুটছে আর সেই আগুনেই বাধা প্রাপ্ত একটি দাঁতাল হাতি ঢুকে পড়েছে মেদিনীপুর শহরে। শহরের পরিসরে মানুষের ছোটাছুটি শোরগেল অতিষ্ট হাতি দৌড়ে বেড়াচ্ছে শহরময়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বনদপ্তর এবং হুলাপার্টি সহ রাস্তায় নেমেছে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। মাইকে ঘোষণা করে জনতাকে বারংবার রাস্তাঘাট ফাঁকা করে দিয়ে বাড়ি ঢুকে যেতে বলা হচ্ছে। বনদপ্তরের প্রাথমিক অনুমান খড়গপুর গ্রামীন এলাকার মাদপুরের দিক থেকে দলছুট ওই হাতিটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গ্রামীন মেদিনীপুর হয়ে শালবনী থানার ভাদুতলার জঙ্গলে প্রবেশ করতে চেয়েছিল কিন্তু জঙ্গলে ভয়াবহ আগুনের কারনে সেটি পিছু হটে মেদিনীপুর শহরে ঢুকে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দাঁতালটিকে মাদপুরের দিকে দেখা গেছিল।
পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, মনে করা হচ্ছে ওই দাঁতালটি ৬০নম্বর জাতীয় সড়কের পাশাপাশি এলাকা ধরে মেদিনীপুর শহরের হবিবপুর হয়ে বিজয় সাহার গলি ধরে শহরের ভেতরে প্রবেশ করেছে। হাতিটিকে এরপর দেখা যায় পঞ্চুর চক ও মেদিনীপুর কলেজের সামনে দিয়ে মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট মাঠে প্রবেশ করতে। ঘটনায় পঞ্চুর চক ও কলেজের সামনের জনতা হৈ চৈ শুরু করে পালাতে থাকে।
এদিকে জনতার শোরগোল আর চোখ ধাঁধানো আলোয় অপরিচিত জায়গায় হাতিও দৌড়াতে থাকে প্রানপনে। এরপর হাতি কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ধরে ঢুকে পড়েছে নান্নুরচক, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের রাস্তায়।খবর পেয়েই ছুটে আসেন বনদপ্তরের বাহিনী, হুলাপার্টি সহ বড় কর্তারা। ছুটে আসে পুলিশও। হুটার ও সাইরেন বাজিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে জনতাকে।
এদিকে হাজার হাজার মানুষ অতি উৎসাহ নিয়ে ছুটতে থাকে হাতির পেছনে ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে হাতিটিও। ভয়ে ত্রাসে উন্মত্তর মত আচরন করছে সেটি। এরপরই রাস্তায় নামেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষ। এক বিশাল র্যাফ বাহিনী নিয়ে হাত মাইক নিয়ে তিনি জনতাকে অনুরোধ করেন হাতির কাছ থেকে সরে যেতে। শহরবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে রাস্তাঘাট দোকানপাট ছেড়ে দিয়ে অবিলম্বে ঘরে ঢুকে যেতে।
এদিকে বনদপ্তরের কর্তাদের মাথায় হাত পড়েছে। ওদিকে শালবনীর ভাদুতলার জঙ্গলে দাউ দাউ করে জ্বলছে অমূল্য গাছ। ৬০নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর আগুন ছুটছে গোদাপিয়াশাল জঙ্গলের দিকে। কোটি কোটি টাকার গাছ পুড়ে যাওয়ার পথে। উত্তুরে হওয়ার দাপটে সেই আগুন বেড়েই চলেছে। কিছুতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছেনা।
ফলে হাতিকে মেদিনীপুর শহরের উত্তরের সমান্তরাল পথের পরিবর্তে পূর্ব দিকের তাঁতিগেড়িয়া অথবা রাঙামাটি হয়ে চাঁদড়ার জঙ্গলে ঢোকানোর চেষ্টা করার কথাই ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রেললাইন পের করতে হবে হাতিকে। সেক্ষেত্রে রেলের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার কথা ভাবা হচ্ছে। সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা শেষ খবর পাওয়া অবধি হাতি মেদিনীপুর শহরেই অবস্থান করছে।