ওয়েব ডেস্ক : বন্ধ পুরী, দুরস্ত দার্জিলিং। সিকিমের অবস্থা তথৈবচ। এই অবস্থায় ভরসা দিঘাই। করোনার বাজারে পুজোয় এবার কলকাতায় থাকতে চাইছেনা অনেকেই। তারাও পুজোর কদিন মুক্তি খুঁজছেন দিঘায়। আর যাঁরা ফি বছর পুজোর সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন সেই বাঙালিও এবার হত্যে দিয়ে দিঘাতেই।
দেশ জুড়ে আপাতত বন্ধ একাধিক দুরপাল্লার ট্রেন, তারওপর করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে এই মূহুর্তে কোনাভাবেই অন্যান্য রাজ্যে ঘুরতে যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে সব মিলিয়ে দিঘার এখন রমরমা বাজার। অবশ্য শুধুই দিঘা নয় সঙ্গে শিকে ছিঁড়েছে নিকটবর্তী দীঘা, শংকরপুর, মন্দারমণি, তাজপুরেরও। এখুনি হিড়িক পড়ে গেছে ছোটার তার ওপর ইতিমধ্যেই বুক হয়ে গিয়েছে দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুরের একাধিক হোটেল। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে দিঘায় পৌঁছতে পারে, সেকারণে ইতিমধ্যেই দিঘা–শংকরপুর হোটেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দিঘার স্টেশন ম্যানেজারের কাছে পুজোর আগেই স্পেশাল ট্রেন চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে হোটেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদন মেনে এখনই ট্রেন খোলার আশ্বাস দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে দিঘার স্টেশন ম্যানেজার জানিয়েছেন, তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষগুলির দাবি নিয়ে দিঘা রেল কর্তৃপক্ষ উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। এদিকে দীর্ঘ কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে চালু হয়ে পরিষেবা। এর জেরে পুনরায় ব্যবসা শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, হোটেলগুলিতে যে হারে বুকিং চলেছে তাতে মনে করা হচ্ছে পুজোর দিনগুলিতে দিঘায় প্রায় কয়েক লক্ষ পর্যটকের আনাগোনা হবে। সেকারণেই পর্যটক টানতে দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্পেশাল ট্রেনের দাবি জানিয়েছেন। তবে এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত রেলের তরফে স্পেশাল ট্রেন চালানোর আশ্বাস দেওয়া হয়নি।
এদিকে পর্যটকদের চাপে আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনলাইন বুকিং। জানা গিয়েছে, এর মধ্যেই দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের প্রায় সব হোটেলেরই ৯০% বুকিং শেষ। এদিকে বুকিংয়ের হিড়িক দেখেই পুজোয় এবার দিঘার পর্যটক সংখ্যা কতকটা ব্যাপক হবে তা আন্দাজ করা যাচ্ছে৷ ফলে করোনা পরিস্থিতিতে যাতে কোনোভাবেই সংক্রমণ না ছড়ায়, সেকারণে সাবধানতার অবলম্বন করতে অতিরিক্ত মুনাফার বদলে পর্যটকদের নিরাপত্তাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে হোটেল কর্তৃপক্ষগুলি। ফলে লোভ সামলে বাকি থাকা ১০% বুকিং আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
এবিষয়ে নিউ দিঘা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবব্রত দাস জানিয়েছেন, “করোনার জন্যে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ রাজ্যের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাই এবার পুজোর ছুটিতে দিঘাকেই বেড়ানোর জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। দিঘার অধিকাংশ হোটেল বুকিং শেষ হয়ে গিয়েছে। কোনও পর্যটক যদি কালোবাজারির শিকার হচ্ছেন বলে মনে করেন, তবে যেন তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংগঠন কিংবা উন্নয়ন পর্ষদ কিংবা দিঘা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।