নিজস্ব সংবাদদাতা: দিঘায় আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার হল বানানোর সময় কয়েক’শ ঝাউ গাছ কাটা হয়েছিল এবার ঝাউয়ের জঙ্গলের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের নামে একের পর এক কেয়ার জঙ্গল কেটে উপড়ে নির্মূল করার কাজ চলছে অভিযোগ করলেন একটি পরিবেশ আন্দোলনকারি সংস্থা। ওই সংস্থার অভিযোগ সৌন্দর্যায়নের নাম করে ওল্ড দিঘার জগন্নাথ-ঘাট সংলগ্ন এলাকায় নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে ঝাউ গাছ এবং কেয়ার জঙ্গল আর এরফলে আগামীদিনে দিঘাকে সম্পূর্ণভাবে সমুদ্রে নিমজ্জিত হওয়ারই পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ওই পরিবেশ আন্দোলনকারি সংস্থা।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে সংস্থার দাবি। উল্লেখ্য সম্প্রতি দিঘার জগন্নাথঘাট এলাকার সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে ১০ কোটিরও বেশি টাকা খরচে শুরু হতে চলেছে কংক্রিটায়নের কাজ। গ্রানাইট, মার্বেল, টাইলসে ইত্যাদি নানা সমারোহে ঝাঁ-চকচকে হয়ে উঠবে এলাকা। আর তারই প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসাবে প্রাথমিকভাবে এলাকার কেয়া জঙ্গল এবং ঝাউগাছ সাফ করার কাজ শুরু হয়েছে।
পরিবেশকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উন্নয়নের নামে পুরো পরিবেশ নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। জেসিবি মেশিন নিয়ে এসে গাছগুলির শেকড় উপড়ে ফেলা হচ্ছে। দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমনি, তাজপুর এলাকায় কর্মরত পরিবেশ আন্দোলনকারি সংস্থা ‘পূর্ব মেদিনীপুর কোস্টাল প্রটেকশন ক্যাম্পেন’ নামক সংগঠনটির দাবি, এই অবৈজ্ঞানিক ও অপরিকল্পিত সৌন্দর্যায়নের বলি হতে চলেছে দিঘার তটভূমি। যেভাবে নির্বিচারে ঝাউ এবং কেয়া জঙ্গল উপড়ে ফেলে নির্মূল করা চলছে তাতে দিঘার তটভূমি রক্ষার প্রাকৃতিক সুরক্ষা কবচ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জলোচ্ছাস জনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় ধ্বংস করে দেবে দিঘার তটভূমি ও তার বসতি এলাকাকে।’
সংগঠনটির অন্যতম সদস্য কিংশুক পন্ডা নিজে গবেষণা করছেন উল্লেখিত এলাকা সহ গঙ্গাসাগর ও বকখালির তটভূমি এলাকায় পর্যটনের প্রভাব নিয়ে। কিংশুকের দাবি, “যে কোনও সমুদ্র বেষ্টিত তটভূমিতেই দেখতে পাওয়া যাবে কেয়ার জঙ্গল। এর ঘন সারিবদ্ধ শেকড় আর সুউচ্চ ঝোপ তটভূমির মৃত্তিকার সংবন্ধন আর সামুদ্রিক জলোচ্ছাস থেকে তটভূমি আর তার মানুষকে রক্ষা করে। প্রকৃতির এই নির্ভরযোগ্য সুরক্ষা কবচকেই ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।”
সংগঠনের কর্তাদের দাবি, প্রাচীন এই কেয়া জঙ্গল বাঁচিয়েই সৌন্দর্যায়ন করা যেত। কিন্তু তা হচ্ছে না। এই কাজে আরও প্রচুর কেয়া জঙ্গল এবং ঝাউগাছ কাটা পড়বে। তাঁরা কেয়া জঙ্গল এবং ঝাউগাছ বাঁচিয়ে উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, “ঝাউগাছ,কেয়া গাছ সহ নানা ধরনের স্বাভাবিক উদ্ভিদ উপকূলের ভূমিক্ষয় ঠেকায় পাশাপাশি সমুদ্রের পাড়ে ও জলে কীটপতঙ্গ ও ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে দূষণ বাড়বে।” যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।