Homeএখন খবরডেবরায় আদর্শ কোভিড-বিধি মেনেই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস সাফ করল চোর! ধন্দে...

ডেবরায় আদর্শ কোভিড-বিধি মেনেই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস সাফ করল চোর! ধন্দে পুলিশ, দেখুন চোরের ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: নাক অবধি তোলা মাস্ক, মাথায় করোনা ক্যাপ। ফুল হাতা জামা কব্জি অবধি টানা। চোখে চশমা, গলায় গলবন্ধ। না, করোনা ঢুকবে শরীরে এমন উপায় নেই। যদিও করোনার ভয়ে নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার ৮নম্বর গোলগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েত অফিস চুরি করতে এসে এমনি ছদ্মবেশে এসেছিল চোর। আর সে ছদ্মবেশ এমনই জাঁদরেল যে পুলিশ তো দূরের কথা করোনার প্রথম,দ্বিতীয়,তৃতীয় কোনোও স্ট্রেইনই ছুঁতে পারবেনা চোর কে। তবে হাজার হোক চোর বলে কথা তাই টাইম ধরে অপারেশন করতে হবে তাই হাতে একটা কালো ব্যান্ডের ঘড়ি। আর মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য পিঠে ব্যাগ, হাতে থলি।
শনিবার গভীর রাতে গোলগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস চুরি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেখা যাচ্ছে চোর একটি নতুন ল্যাপটপ আর ২০ হাজার টাকার কিছু বেশি নগদ চুরি করে নিয়ে গেছে। পঞ্চায়েত অফিসের লাগানো সিসিটিভি ফুটেজে রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ চোরের অস্বিত্ব ধরা পড়েছে। দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি করোনা প্রতিরোধক বর্ম পরেই এসেছে চোর। খানিকটা লম্বাটে আর দোহারা চেহারা বিশিষ্ট চোর বাবাজির এই বেশ ভূষণ দেখে পুলিশকে রীতিমত ধন্দে পড়তে হয়েছে কারন পোশাকের বাইরে বের করে এনে চোরকে আলাদা করে চেনা খুবই মুশকিল।

স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মামনি ভূইঁয়া জানিয়েছেন, ‘ ল্যাপটপটি মাত্র মাস দুয়েক আগেই কেনা হয়েছিল। এছাড়া দুটি তহবিল থেকে ২০হাজার টাকার কিছু বেশি চুরি হয়েছে বলে এখনও অবধি আমরা জানতে পারছি। কর্মীদের রাহা খরচ বাবদ কিছু টাকা ছিল, এছাড়া জন্ম মৃত্যু জনিত রেজিস্ট্রেশন এবং কিছু প্রকল্প অনুমোদন বাবদ আবেদন মূল্য ইত্যাদি এই টাকার মধ্যে রয়েছে। তবে চুরি যাওয়া টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সমস্ত হিসাব নিকাশ করার পরই তা বোঝা যাবে। আমরা আপাতত ২০হাজার টাকা চুরি হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছি।’
গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের এক কর্মী জানিয়েছেন, “১১টি আলমারি ভেঙেছে চোর। তার মধ্যে ২টি আলমারিতে পৃথকভাবে ওই দুটি তহবিলের টাকা রাখা ছিল। একাধিক মানুষ ছিল কিনা বোঝা যাচ্ছেনা তবে সিসিটিভি ফুটেজে একজনকেই দেখা গেছে। আমাদের মনে হয়েছে চোর এই অফিসের ভেতরকার খুঁটিনাটি অবস্থান সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত। অফিসের মধ্যে সিসিটিভি রয়েছে এটাও সে জানে। চুরির দিন হিসাবে শনিবার রাতকেই বেছে নিয়েছে কারন রবিবার অফিস প্রায় পুরোপুরি বন্ধই থাকে। ফলে চুরির খবর টের পেতে যথেষ্ট সময় লাগবে মানুষের। হয়েওচে তাই চুরি হওয়ার ২৪ঘন্টা বাদে আমরা চুরির খবর জানতে পারি অর্থাৎ সোমবার বেলার দিকে। মনে হচ্ছে চোর এলাকারই কেউ এবং খুবই পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছে। এছাড়াও চোর জানত যে কর্মীদের রাহা খরচ বাবদ বকেয়া পেমেন্ট করার জন্য শুক্রবারই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে এনে রাখা হয়েছিল।”

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার বিকালে গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে যায়। কারন পঞ্চায়েত অফিসের বেশ কিছু কর্মী এবং আধিকারিক সোমবার সরাসরি নির্বাচনের প্রশিক্ষণ নিতে চলে গেছিলেন। তাঁরা না ফেরা অবধি পুলিশ সবার সঙ্গে কথা বলতে পারবেনা। প্রশিক্ষণ শেষ করে তাঁরা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আসার পর পুলিশ পৌঁছায়। সবার সঙ্গে কথা বলে তদন্তের কাজ শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সমস্ত হিসাব নিকেশ করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ডেবরা থানায়।

RELATED ARTICLES

Most Popular