নিজস্ব সংবাদদাতা: উপসর্গ বিহীন করোনা রুগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে কিন্তু তার আগেই জোর ধাক্কা খেয়ে গেল হাসপাতালই, মঙ্গলবার জানা গেল হাসপাতালের ২জন চিকিৎক, ২জন নার্স,১ কর্মচারী আর রুগীদের জন্য খাবার রান্না করার রাঁধুনি করোনা পজিটিভ হয়ে বসে আছেন। পুরো ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে ডেবরা হাসপাতাল সহ পুরো ডেবরা এলাকায়।
কারন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুগী, রুগীকে দেখতে যাওয়া আত্মীয়, আক্রান্তদের সঙ্গে সংযুক্ত পরিবার মিলিয়ে আনলক পর্বে হাসপাতাল সংলগ্ন দোকানপাট সবই এখন সন্দেহ আর আশঙ্কার বাতাবরনে আতঙ্কে রয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, অযথা আতঙ্কিত না হতে এবং সতর্ক ও সচতেন হওয়ার জন্য নাগরিকদের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার ডেবরা এলাকায় মাইক প্রচার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসককে পাঠানো হয়েছিল শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে করোনা রুগীদের চিকিৎসার জন্য। গত জুন মাসে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার লেবেল ফোর হাসপাতালে উন্নীত করা হয় এবং অত্যধিক সংক্রমিত বা ঝুঁকি পূর্ন রোগীদের এখানে চিকিৎসা করা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রামের বড়মা কোভিড হাসপাতাল নির্ভরশীলতা কাটানোর জন্যই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এই উদ্যোগ নেয়।
শালবনীর নিজস্ব চিকিৎসক নার্স ছাড়াও পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্য জায়গা থেকেও চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক ৬২ বছর বয়সী চিকিৎসকও সেখানে সপ্তাহে কয়েকদিন ডেপুটেশনে যেতেন। ওই হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি অন্যদিন ডেবরা হাসপাতালে চিকিৎসা করতেন।
দিন তিনেক আগে কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীদের নিয়ম মাফিক করোনা পরীক্ষায় তিনজন নার্স ও ওই চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন। এরপরেই টনক নড়ে যে ওই চিকিৎসক ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতেও চিকিৎসা করেছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এখানকার চিকিৎসক চিকিৎসাকর্মীদেরও নমুনা সংগ্ৰহ করা হবে।
সেইমত ৫০ জনের নমুনা সংগ্ৰহ করা হলে আরেক চিকিৎসক ও ২জন নার্স সহ ৫জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন রাঁধুনি রয়েছেন ফলে রুগীদের জন্য রান্না করা খাবার পরিবেশন করা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের পরিবারকে বলা হয়েছে বাড়ি থেকে খাবার আনার জন্য।
এদিকে ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কে রুগী এবং তাদের পরিবার। ওই চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মীরা রুগীদের চিকিৎসায় অংশ নিয়েছেন। আত্মীয়রা হাসপাতালে গেছেন, ওয়ার্ডে ঢুকেছেন এবং রুগীর কাছে গিয়েছেন। তারা আবার আশেপাশের দোকানে গিয়েছেন ফলে কার থেকে ফের কে আক্রান্ত হয়েছেন বোঝা মুশকিল তাই চাপা টেনশনে সবাই।
যদিও স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, ভয়ের কিছু নেই যদি কেউ এঁদের সংস্পর্ষে এসেছেন বলে আশঙ্কায় থাকেন তবে তিনি চাইলে নমুনা দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে যারা নমুনা দিতে ইচ্ছুক তাদের সবারই নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড স্যানেটাইজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।