Homeএখন খবরকরোনার রাহু মুক্ত ঘাটালের নিজামপুর, বাড়ি ফিরলেন তৃতীয় ও শেষ আক্রান্ত...

করোনার রাহু মুক্ত ঘাটালের নিজামপুর, বাড়ি ফিরলেন তৃতীয় ও শেষ আক্রান্ত গৃহবধূ

নিজস্ব সংবাদদাতা: মঙ্গলবার পুরো দক্ষিনবঙ্গের মতই ঘন মেঘভর্তি আকাশ ঘাটাল মহকুমাতেও। মাঝে মধ্যে সূর্য উঁকি দিলেও মোটের ওপর আলো কম। তারপর সন্ধ্যা ঘনাতে আরও জমাট বেঁধেছিল অন্ধকার। তারও চেয়ে ঘন অন্ধকার যেন মহকুমার দাসপুর থানার নিজামপুরে। শুধুই পশ্চিম মেদিনীপুর নয় সারা পশ্চিমবঙ্গে রাতারাতি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল নিজামপুর, জেলার প্রথম করোনা আক্রান্তের গ্রাম। প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মেলার পরেই সিল করে দেওয়া হয়েছিল দুর্বাচটি নদীর তীরে নিজামপুর পশ্চিম পাড়া। বন্দী হয়ে গেছিলেন ১৬০পরিবারের শষ্য শ্যামলা সুজলা সুফলা সেই গ্রাম। তবুও আতঙ্কের শেষ নেই যেন একের পর দুই আর দুইয়ের পর তিন তিনজন আক্রান্ত করোনায়। হাড় হিম করা আতঙ্ক নিজামপুর জুড়েই। মঙ্গলবার সেই আতঙ্কের অবসান হল। রাতের অন্ধকারে গ্রামের রাস্তায় আলো জ্বালিয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের গাড়ি নামিয়ে দিয়ে গেল গৃহবধূ পিংকি জানাকে। গ্রামের শেষতম করোনা আক্রান্ত এখন সম্পূর্ন সুস্থ, করোনা বিজয়িনী।

গত ১৩ই এপ্রিল ওই একই হাসপাতাল থেকে ১৫দিনের লড়াই শেষ করে ফিরেছিলেন গনেশ জানা, ঘাটাল মহকুমা তথা জেলার প্রথম আক্রান্ত। মুম্বাইয়ের স্বর্নশিল্পীর পেশায় থাকা গনেশ ২১মার্চ বাড়িতে ফেরার দু’দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আরও অসুস্থ। ২৯ তারিখ আসে দুঃসংবাদ করোনা পরীক্ষায় কোভিড পজিটিভ সে। ৩০তারিখ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। এরপরই একে একে আক্রান্ত গণেশের বাবা এবং মাত্র ৬ মাসের বিবাহিতা স্ত্রী পিংকি। তাঁরাও স্থানান্তরিত হন বেলেঘাটায়।

গনেশের ফেরার কিছুদিন পরেই সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তাঁর বাবা এবং অবশেষে পিংকি। অবশেষে রাহু মুক্ত নিজামপুর। গত প্রায় ১মাস বন্দী নিজামপুর। চার চৌকিতে তিন শিফটে ৭২জন পুলিশ আর সিভিক কর্মী ঘিরে রেখেছে নিজামপুর কে। উর্বর পলি লালিত নিজামপুর শুধু করোনায় বন্দী হওয়ায় ক্ষেতের ফসল পড়ে পচে শেষ হয়ে গেছে। সবজি চাষে সমৃদ্ধ নিজামপুরে সবজি কিনতে আসেনি পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁরাও যেতে পারেনি বাজারে। প্রায় সাড়ে ৬কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। অবশেষে দুশ্চিন্তার অবসান। গ্রামের লক্ষী ফিরে এসেছে গ্রামে, এখন নতুন করে শষ্যলক্ষীর আরাধনায় মেতে উঠবে নিজামপুর, এমনই আশার এখন গ্রামবাসীদের মুখে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা জানান, ‘সত্যি খুব খুশির খবর যে ওই পরিবারের সবাই সুস্থ হয়ে ফিরলেন সবাই।’

RELATED ARTICLES

Most Popular