নিজস্ব সংবাদদাতা: নিজেদের ভুলের মাশুল দিয়ে হারিয়েছেন মেয়েকে। সাপে কামড়ানোর পর ক্ষতস্থান বুঝতে না পেরে ১৪ বছরের কিশোরীকে নিয়ে গেছিলেন ওঝার কাছে কিন্তু কাজে লাগেনি ওঝার কেরামতি, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রান যায় কিশোরীর। সে মেয়েকে শ্মশানে রেখে এসেছে পরিবার কিন্তু ঘরে ঢুকতে পারেননি চারদিন পেরিয়ে কারন ঘরে রয়ে গেছে সাপ। বনদপ্তরের কর্মীরা এসে খুঁজে গেছেন কিন্তু সাপের দেখা মেলেনি কিন্তু পরিবার দেখেছে সেই সাপ একবার বেরিয়ে ফের ঢুকে গেছে ঘরে, মেয়ের শোক ভুলিয়ে দিয়েছে চরম আতঙ্ক। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার সোনামুই গ্রামের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী মৃত সোনালী সামন্তের পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার বাবা মা সহ পরিবারের চার সদস্যের সাথে একই সাথে শুয়ে ছিল সোনালী। সেই সময় তাকে কিছু একটা কামড়ে দেয়। কি কামড়ে ছিল জানতে পারেনি। তারা যেমন সাপ দেখেনি তেমনি দেখতে পায়নি স্পষ্ট ক্ষত চিহ্ন। পোকা বা বিছা কামড়েছে অনুমান করে নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে। ওঝা কিছু করতে না পেরে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। বাড়ি ফিরে ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়া সোনালীকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বলেন কালাচ সাপ কামড়েছে ততক্ষনে জীবনের আশা শেষ।
এরপর সোনালীকে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুক হাসপাতালে, পথেই মৃত্যু হয় তার। কিশোরী কন্যার সেই মৃত্যুর শোকের চেয়েও এখন বড় আতঙ্ক সেই না দেখতে পাওয়া সাপ। সোনালীর বাবা নারায়ন সামন্ত জানিয়েছেন,” মেয়েকে কামড়ানোর আগে কিংবা পরে সাপ দেখতে পাইনি। কিন্তু ঘরে সাপ আছে জানার পর ঘরে ঢুকতেও সাহস পাইনি। বনদপ্তরের লোকেরা এসে বাড়ির ভেতরে ঢুকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও সাপের দেখা পায়নি। এরপর কার্বলিক আ্যসিড ছড়িয়ে ছিলাম তাতেও দেখা মেলেনি সাপ। ভেবেছিলাম সাপ চলে গেছে। এবার বাড়ি ঢুকে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম কিন্তু রবিবার ফের সাপটাকে দেখতে পাই। বেরিয়ে চট করে ঢুকে যায়। মারার বা ধরার সুযোগ ছিলনা। তারপর আর বাড়ি ঢোকার চিন্তা করতে পারছিনা। গ্রামের মন্দিরের আটচালাতেই আছি।”
“নারায়ন সামন্তের ইটের প্লাস্টারহীন দেওয়াল, অনেক পুরনো। সম্ভবত তারই কোনও ফাটলে ঢুকে বসে আছে সাপটা। কালাচ চিতি প্রজাতির সাপ, দেওয়ালের সরু ফাটলে কিংবা ফাঁক ফোকরে থেকে যাওয়াটা অসম্ভব কিছুই না।” বললেন এক বনকর্মী। এখন কী ভাবে ঘরে ঢুকবেন ভেবেই পাচ্ছেননা সামন্ত পরিবার।