নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার রাত ১০টাতেই হাওড়া আর শিয়ালদহের দখল নিয়েছে লালপতাকা। রাত ১১টার সময় ব্রিগেডের মাঠেই রাতের খাবার খেতে বসেছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া। পেছনে পেছনে আরও আসছে এদিকে হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে স্ট্যান্ড রোড ওদিকে মানিকতলা, মৌলালি হয়ে লেনিন সরনী। পথের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প খুলে বসেছেন সিপিএম, ডিওয়াইএফআই, এসএফআই আর মহিলা সমিতির স্বেচ্ছাসেবকরা। অক্লান্ত ভাবে চলছে কুইন্টাল কুইন্টাল আটার রুটি বানানো। সঙ্গে কোথাও আলুর দম, কোথাও ফুলকপি, বাঁধাকপির তরকারি, কমরেডরা খাবেন।
যাঁরা হাঁটছেন, যাঁরা রান্না করছেন কিংবা যাঁরা রাতের ব্রিগেডে দেহখানা এলিয়ে দিয়ে পথ হাঁটার ক্লান্তি জুড়িয়ে নিচ্ছেন সর্বত্রই ছোট চিপে ভরে নেওয়া গান বাজছে। এসময়ের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেওয়া গান, ‘টুম্পা তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব। চেন ফ্ল্যাগে মাঠ সাজাবো।’ ইতিমধ্যেই ১০ লক্ষ শেয়ার ছাড়িয়ে গেছে আর ভিউয়ার হয়েছে ১০০মিলিয়ন।
১০লক্ষ মানুষের সমাবেশ করার লক্ষ্যে বামেদের এই সমাবেশ যে প্রায় সফল হওয়ার মুখে তা বলে দিচ্ছে শনিবার রাতের এই মেজাজ। এখনও পর্যন্ত যা হিসাব মিলেছে তাতে মুর্শিদাবাদ থেকে ৭৫,০০০ এবং দুই বর্ধমান থেকে দেড় লক্ষের বেশি লোক আসছেন। হুগলির সিপিএম জেলা নেতাদের গলাতেও। হুগলির মত ছোট জেলা থেকেও আসছেন ৫০,০০০-এরও বেশি মানুষ। বাঁকুড়া ২৫ এবং পুরুলিয়া ২০হাজার মানুষ নিয়ে মহাজোটের সভায় আসছেন। ঝাড়গ্রাম থেকে ৫,হাজার আর দুই মেদিনীপুর থেকে মোট দেড় লক্ষ লোক আনার লক্ষ্য রয়েছে সিপিএমের। অন্যদিকে শুধু উত্তর ২৪পরগনা দেড় লক্ষ, দক্ষিণ ২৪পরগনা ১লক্ষ, হাওড়া ৮০ হাজার এবং কলকাতার ১লক্ষ মানুষ এই সভায় যোগ দিতে চলেছেন বলে বিভিন্ন বামপন্থী দল গুলি জানিয়েছে।
সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর নেতৃত্ব জানিয়েছেন,জেলার সর্বাধিক সন্ত্রাস কবলিত এলাকা গড়বেতা এবং কেশপুরে বিগ্রেড সমাবেশ উপলক্ষ্যে নজির বিহীন মিছিল মিটিং হয়েছে। মানুষ ভয় ভেঙে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। সবং, ডেবরা, পিংলাতেও ব্রিগেড উপলক্ষ্যে প্রচার কর্মসূচিতে মানুষের অংশগ্রহণ উৎসাহ ব্যঞ্জক। জেলার সর্বত্রই ব্রিগেডের আহ্বান জানিয়ে এলাকা ভিত্তিক ছোট ছোট পথসভা, মিছিল করা হয়েছে । মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমরা নিশ্চিত ব্রিগেডের মাঠে আছড়ে পড়বে পশ্চিম মেদিনীপুরের ব্যাপক অংশের কমরেডরা।’’
এদিকে শারীরিক অবস্থার জন্য নিজে ব্রিগেড যেতে পারছেননা বলে আফসোসের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একটি বার্তায় জানিয়েছেন,” ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে বিভিন্নভাবে খবরাখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। শুনে বুঝতে পারছি বহু মানুষ সমাবেশে আসবেন এবং অনেকে এসে গেছেন। বড় সমাবেশ হবে। এরকম একটা বৃহৎ সমাবেশে যেতে না পারার মানসিক যন্ত্রণা বোঝানো যাবে না। মাঠে ময়দানে কমরেডরা লড়াই করছেন আর আমি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ মেনে চলেছি। ময়দানে মিটিং চলছে আর আমি গৃহবন্দী যা কোনদিন কল্পনাও করতে পারিনি। সমাবেশের সাফল্য কামনা করছি।”