নিউজ ডেস্ক: এবার নদী ও জলাশয়ের জলে মিলল করোনা ভাইরাস। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল গবেষকরা।গত বছর থেকে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই কীভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তা নিয়ে নানা আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। তবে জলের মধ্যে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে, এমন আশঙ্কা এর আগে তৈরি হয়নি। গুজরাটের সবরমতী নদীর জল থেকে মারণ ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলার দাবি করলেন গবেষকরা। না, শুধুমাত্র এই নদীই নয়, পাশাপাশি চান্দোলা ও কাঁকরিয়া জলাশয়ের জলেও মিলেছে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব। আমেদাবাদের গান্ধীনগর আইআইটি (IIT-Gandhinagar)এবং ‘জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স’-এর গবেষকরা ওই নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
বলাই যায়,এই প্রথম কোনও নদীর জলে কোভিড-১৯ ভাইরাস মেলার দাবি উঠল। আইআইটির অধ্যাপক মণীশ কুমার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এইভাবে নদী ও সরোবরের জলে ভাইরাস মেলার বিষয়টি অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯-এর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সপ্তাহে এক বার করে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সবরমতী নদী এবং চান্দোলা ও কাঁকরিয়া হ্রদ থেকে। উল্লেখ্য,সবরমতী থেকে ৬৯৪ ও ওই দুই সরোবর থেকে যথাক্রমে ৫৪৯ ও ৪০২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে গবেষকরা জানাচ্ছেন প্রাপ্ত ভাইরাসগুলি মৃত নাকি জীবিত তা কিন্তু মাইক্রো ল্যাব থেকে জানা যায়নি। অধ্যাপক কুমার জানিয়েছেন, “আমাদের ল্যাব এটা আমাদের জানায়নি যে এই প্রাপ্ত নমুনাগুলি মৃত অথবা জীবিত। কারন আমরা যে পদ্ধতিতে এই গবেষণা করেছিলাম তাতে সেটা জানার সুযোগ ছিলনা। এরজন্য আমাদের আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা এটা ধরে নিতে পারিনা যে এর সবই মৃত। যদিও এখনও এটা প্রমান হয়নি যে জলের মাধ্যমে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ে। এরজন্য আরও গবেষণা ও নাড়াচাড়ার প্রয়োজন রয়েছে।”
কুমার আরো জানিয়েছেন, ” যদি নদী বা জলাশয়ে প্রাপ্ত করোনা জীবাণুগুলি করোনা রুগীর বর্জ্য যেমন মূত্র ইত্যাদি থেকে এসে থাকে তবে তা মৃত কিন্তু যদি এগুলি মানুষের মুখ থেকে নির্গত হয় যেমন গার্গেল ইত্যাদি তাহলে এগুলি জীবিত হবে বলেই মনে হচ্ছে।” অধ্যাপক কুমার জানিয়েছেন সরকারের উচিত সলিড ওয়েস্ট ম্যানজেমেন্ট বা বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়টিতে নজর দেওয়া। এই রিপোর্ট ইতিমধ্যেই ইউনিসেফকে পাঠানো হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন তাঁরা দেশজুড়ে নদী ও জলাশয়গুলিতে পরীক্ষা করে দেখতে চান। তাঁদের দাবি, প্রাকৃতিক জলের উৎসে দীর্ঘ সময় সক্রিয় অবস্থায় থাকতে পারে ভাইরাসগুলি। গত এপ্রিলে দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ ঝাঁপিয়ে পড়ার পরে রাতারাতি পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এরপরই উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে নদীতে ভাসমান করোনায় মৃত রোগীর শবদেহ ঘিরে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়।