নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার অবধিও সব ঠিকঠাক ছিল কিন্ত মঙ্গলবারের ঝাড়গ্রাম পুরোই উল্টো। বাজার ঘাট শুনশান, ফাঁকা বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন জমজমাট ভিড়, খাঁ খাঁ করছে পাঁচ মাথার মোড়। ১০তারিখ বাঁশ বেঁধে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জুবিলী মার্কেট কারন তার আগের দিনই পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা করোনা হাসপাতালে ঝাড়গ্রামের ঠিকানা দেওয়া তিনজন ভর্তি হয়েছিল যার একজন এই জুবিলী মার্কেটের একটি মুদি দোকানের কর্মচারী। কিন্তু তারপরেও সোমবার ঝাড়গ্রামের বাকি বাজারে সমস্যা হয়নি। বিশেষ করে স্টেশন সংলগ্ন বাজার জমজমাটই ছিল কিন্তু মঙ্গলবার কী হল? উত্তর মেলেনি প্রশাসনের কাছ থেকে। সরকারের তালিকায় মঙ্গলবারের বুলেটিনেও বলছে ঝাড়গ্রামে করোনা আক্রান্ত তিনই।
যদিও একটি সূত্র বলছে ওই তিনের পরও সোমবার অর্থাৎ ১১তারিখ আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন এবং বড়মা হাসপাতালের রেজিস্টারে ১২তারিখ আরও তিনটি নাম যুক্ত হয়েছে। এবং আরও আগের ২জন কলকাতা থেকে আসা তরুনকে ধরলে বড়মা হাসপাতালের জেলা ভিত্তিক হিসেবে ঝাড়গ্রামের আটজনের তালিকা আছে যাঁরা চিকিৎসাধীন। জানা গেছে ঝাড়গ্রাম পুরসভার যে তিনজনের করোনা পজিটিভ ফলাফল এসেছিল সোমবার রাতে। কিন্ত অনেক তাঁদের ভর্তি করা হয় তাই বড়মার রেজিস্ট্রারে মঙ্গলবার অর্থাৎ ১২তারিখ দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বড়মার খাতায় ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে ৮ জনের নাম।
জেলা প্রশাসন সূত্রে না জানানো হলেও জুবিলী মার্কেট বা ঝাড়গ্রাম পুরসভার খবর মানুষের কানে কানে পৌঁছে গেছে আর লোকে তাই সতর্ক হয়ে গেছে তাই বাজার শুনশান। সোমবার তিন স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার প্রতিফলন ঝাড়গ্রাম পুরসভাতেও পড়েছে। লকডাউনের বাজারে পুরসভার একমাত্র সাফাই বিভাগই সক্রিয় ছিল কিন্তু মঙ্গলবার কোনও সক্রিয়তাই নজরে পড়েনি সাফাই বিভাগের। কোনও তরফেই কিছু জানানো হয়নি সরকারি ভাবে তবুও সূত্র মারফৎ যেটুকু জানা গেছে এই তিনজন যার মধ্যে পুরসভা এলাকার ২ ও জামবনী এলাকার ১জন রয়েছেন এবং ডাক্তারি পরিভাষায় এঁরা প্রত্যেকেই আ্যসিমটোমেটিক বা উপসর্গহীন তাই এঁদের পরিবারকে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার অবশ্য বিনপুরের গ্রামের রাস্তায় দমকল বাহিনী গিয়ে স্যানিটাইজ করে এসেছে। ঝাড়গ্রাম ও তার আশেপাশের থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মুখ ঘিরে ফেলছেন গ্রামের লোকেরাই। গ্রামে ঢুকতে গেলে কড়া নজরদারি আর কোথা থেকে আসছেন ইত্যাদির জবাব দিতে হচ্ছে। টান টান সতর্ক গ্রাম। কেন এই সতর্কতা প্রশ্ন করতেই ভুরসা, পড়িহাটির যুবকরা বলছেন, ”ঝাড়গ্রাম দাদা নামেই সবুজ আসলে জেলাটা তরমুজ হয়ে আছে। ভেতরে উঁকি মারলেই দেখবেন টকটকে লাল। পুরো তরমুজ জোনে আছি দাদা। তাই এই সতর্কতা।”