নিউজ ডেস্ক: তৃণমূল কর্মীর ক্ষত-বিক্ষত দেহ উদ্ধার ঘিরে ফের সরগরম কোচবিহার। বৃহস্পতিবার রাতে কচবিহার জেলার পুন্ডিবাড়ি থানা এলাকার খোল্টা মরিচবাড়িতে উদ্ধার হল তৃণমূলকর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। মৃতের নাম নদীরাম মণ্ডল, বয়স ৬৫ বছর। তার মুখে ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাঁকে নিজেদের দলের সদস্য বলেই দাবী করেছে তৃণমূল। অভিযোগের তির পদ্ম শিবিরের দিকে। তদন্তে নেমেছে পুন্ডিবাড়ী থানা পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের মরিচবাড়ি-খোল্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মরিচবাড়ি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী নদীরাম মন্ডল বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে বাড়ী থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি ফাঁকা জায়গায় তার রক্তাক্ত দেহ পরে থাকতে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর মুখে ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছায় পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে এলাকায় যান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। মৃত কর্মী নদীরাম মন্ডলের পরিবারের সাথে কথা বলেন তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের মরিচবাড়ি-খোল্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথের সক্রিয় কর্মী নদীরাম সরকার তিনি এদিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে যখন বাড়ী ফিরছিলেন সেই সময় বাড়ী থেকে ৫০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় তার রক্তাক্ত দেহ এলাকার মানুষ দেখতে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মারা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িয়ে রয়েছে প্রশাসনকে আমরা বলেছি তৎপরতার সাথে সেই দোষীদের গ্রেপ্তার করবার জন্য। নদীরাম মন্ডল আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী। তার এই খুন হওয়ার পেছনে কোন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে কি না সে ব্যপারে সন্ধিহান রয়েছি। কারণ চারিদিকে বিজেপি যে ভাবে খুনের রাজনীতি করছে তার সঙ্গে এর কোন যোগ সূত্র আছে কি না সেটাও আমরা দলীয় স্তরে খোজ নিচ্ছি।”
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, পারিবারিক বিবাদে খুন হয়েছেন নিধিরাম। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। শুক্রবার মৃত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী নদীরাম মণ্ডলের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তার বাড়ীতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, কোচবিহার জেলায় কিছুদিন আগেই (২৩ শে ডিসেম্বর) তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী এবং বুথ কমিটির সদস্য কে খুন করার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের রামপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিঙ্গীমারী এলাকায়।
জানা যায়, তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের রামপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিঙ্গীমারী এলাকার বাসিন্দা খালেক মিঞা, বয়স ৭০। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সক্রিয় কর্মী এবং বুথ কমিটির সদস্য ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বুধবার রাতে কয়েকজন বিজেপি সমর্থক খালেক মিঞাকে তার বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে চাষের জমিতে রক্তাক্ত অবস্থায় খালেক মিঞার দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিজেপির পতাকা ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয় সেদিন।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ করে, খালেক মিঞাকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে বিজেপি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বক্সিরহাট থানার পুলিশ এবং মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে বক্সিরহাট থানার পুলিশ।বিধানসভা নির্বাচন দরজায় করা নাড়ছে। আর তার আগেই বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজার শহর কোচবিহার।