নিজস্ব সংবাদদাতা: রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র (RBSK) যা এই রাজ্যে শিশুসাথী প্রকল্প নামে চলে তার আওতাধীন প্রায় ১৬০০ আয়ুষ চিকিৎসক গত ৭ বছর ধরে প্রাপ্য বেতন পাচ্ছেন না এমনটাই অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে(PMO) অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানানোর জন্য রাজ্যেকে তলব করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। উল্লেখ্য এই আয়ুষ চিকিৎসকদের বেতনের ৬০% কেন্দ্র প্রদান করে থাকে। কিন্তু বেতন কাঠামো তৈরি করে রাজ্য। রাজ্য যাই বেতন কাঠামো স্থির করুন না কেন কেন্দ্র তার প্রদেয় পাঠিয়ে দেয় রাজ্যকে।
রাজ্যের কর্মরত এই চিকিৎসকদের দাবি, এমনিতেই তাঁরা ভিন রাজ্যের চিকিৎসকদের থেকে অর্ধেকের কম বেতন পান তার ওপরে রাজ্য সরকার সম্প্রতি একটি বেতন কাঠামো রাজ্যের পোর্টালে আপলোড করেছেন কিন্তু বাস্তবে RBSK চিকিৎসকরা তার চেয়ে প্রায় ১৫হাজার টাকা কম বেতন পাচ্ছেন। গত মাসেই এই আয়ুস চিকিৎসকরা পেন ডাউন করে ছিলেন তারপরই তাঁরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ আকারে পাঠান। এই চিকিৎসকরা দাবি করেছেন,
RBSK চিকিৎসকরাওরা সারা দেশের সাথে এরাজ্যে করোণার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। অথচ তাঁরা বিরাট বঞ্চনার শিকার পশ্চিমবঙ্গে।
এঁরা বলেন, ২০১৩ সাল রাজ্যে থেকে চালু হওয়া মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প শিশুসাথীর মূল কাণ্ডারী এই RBSK চিকিৎসকরাই। গ্রামে ও শহরে স্কুলে স্কুলে ঘুরে ঘুরে শিশুদের জন্মগত হার্টের রোগ, তালু ও ঠোঁট কাটা, চক্রপদের মতো আটত্রিশ রকমের সমস্যা খুঁজে বার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এর পাশাপাশি বিগত আটমাস ধরে করোণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সন্দেহজনক ব্যক্তির লালারস সংগ্রহ, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন, সেফহোমে রোগীদের চিকিৎসা সহ করোণা হাসপাতালে চিকিৎসা এমনকি সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ সরকারিভাবে তাঁরা বিরাট বঞ্চনার শিকার।
বিভিন্ন রাজ্যে একই পদে কর্মরত চিকিৎসদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক বেতনে তাঁরা এই রাজ্যে কর্মরত। তাঁদের মূল বেতন বৃদ্ধি ২০১৩ সালের পর থেকে এখোনো হয়নি। বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি অনিয়মিত। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন কর্তার কাছে জানিয়ে কোনো আশা না মেলায় তাঁরা ৯ অক্টোবর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কে জানান। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে পাঠান। সেই মন্ত্রকেরই এক যুগ্ম সচিব বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের তলব করেছেন বলেই খবর।
আর বি এস কে ডাক্তারদের সংগঠন ‘আমরা’র জনৈক চিকিৎসক সদস্য ডাক্তার ঘোষাল জানান, বিষয়টি ইতিপূর্বে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও মাননীয় রাজ্যপালের নজরেও তাঁরা এনেছেন পত্রের মাধ্যমে। এ ব্যাপারে কোনো সদর্থক উদ্যোগ তাঁরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেখতে পান নি। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের আচরণে তাঁরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এখন কেন্দ্রের তৎপরতায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন তাঁরা।