শশাঙ্ক প্রধান: ২২ দিন ধরে রিলে অনশনে একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ক্যাজুয়েল শিক্ষাকর্মীদের বেশ কয়েকজন। অথচ অসুস্থ আন্দোলনকারীদের চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডাক্তার পাঠানো বা চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে না। তারই প্রতিবাদে অনশন মঞ্চ থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হলেন অংশগ্রহনকারী এমন কর্মী সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার এমনই ডেবরা কলেজের সামনে সেই অবরোধে ৬ নং জাতীয় সড়ক থেকে দীঘাগামী পটাশপুর, সবং, ময়না এমন রুটের সমস্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। থমকে যায় জনজীবন।
উল্লেখ্য গত ১২ ই অক্টোবর থেকে ডেবরা কলেজ গেটের সামনে নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে রিলে অনশনে বসেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার কলেজ গুলির ক্যাজুয়েল কর্মীরা। মূলত তিন দফা মূলদাবীতে সারা রাজ্য জুড়ে এমন কর্মসূচী চলছে। স্থায়ীকরন, ন্যূনতম বেতন, এবং সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা সহ সরকারী কর্মী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবীতে এই কর্মসূচী। এই অনশনে সামিল হয়ে গত ২২ দিনে দফায় দফায় সাত জন অসুস্থ হয়।
সুস্থ হয়ে পুনরায় আবারও সেই কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করেননি প্রসাশন এমনই অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, “হতেই পারে সরকারের বিরুদ্ধে আমরা এই কর্মসূচি নিয়েছি কিন্তু তা’বলে সরকারের হাসপাতাল অসুস্থ আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা করবেনা? রাজ্যে সরকার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যদি কেউ আহত, অসুস্থ হন সরকারের হাসপাতাল তার দায়িত্ব নেবেনা? এতো মারাত্মক অগণতান্ত্রিক, প্রতিহিংসার লক্ষণ! এরই বিরুদ্ধে ফের অন্য আরেকটি আন্দোলনে সামিল হতে হয়েছে আমাদের।”
উল্লেখ্য এই মুহূর্তে সারা রাজ্য এই ক্যাজুয়েল কর্মীদের সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার। এঁদের দাবি কলেজ গুলির সিংহ ভাগ কাজ সহ শিক্ষার পরিকাঠামো ঠিকঠাক রাখার কাজ এমন কর্মীদের উপরই নির্ভর। অথচ তারাই আজ বঞ্চিত ন্যুনতম বেতন টুকুও পাননা। কোনোও বেতন কাঠামো নেই, নেই স্থায়িত্বের নিরাপত্তা। এ নিয়ে গত দেড় বছর ধরে বিভিন্ন স্তরে আন্দোলন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা হয়েছে, আশ্বাস মিলেছে কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয়নি।
গত দুদিন জঙ্গলমহলের গোপীবল্লভপুরের সুবর্ণরেখা মহাবিদ্যালয় ইউনিটের পক্ষ থেকে এই রিলে অনশন চলছে। সামিল হয়েছেন কলেজ কর্মীদের পরিবার সদস্যরাও। তাদেরই এক পরিবারের সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় ডেবরা বাজারে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় এমন অস্থায়ী কলেজ কর্মচারীরা সহ সামিল হওয়া তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশ প্রসাশন হস্তক্ষেপ করায় দেড় ঘন্টা পর অবরোধ ওঠে।