নিজস্ব সংবাদদাতা: মৃত্যু মিছিলে প্রতিদিনই সংযোজিত হচ্ছে বাড়ি ফেরার পথে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম। এবার সেই মিছিলে সামিল হলেন ভারতের আরেক বিশ্বকর্মা। রবিবার উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। সাইকেল নিয়ে সঙ্গীদের সাথে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ির চাকায় পিষে গিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। স্থানীয় এবং পুলিশের তৎপরতায় ওই শ্রমিকের দেহ বিহারের পূর্ব চম্পারণে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ২৭ বছরের মৃত ওই শ্রমিক সাঘির আনসারি বিহারের পূর্ব চম্পারণের বাসিন্দা। স্ত্রী এবং তিন সন্তান নিয়ে সংসার তাঁর। একটু বেশি উপার্জনের আশায় দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। কিন্তু আচমকা লকডাউনে বিপাকে পড়লেন তিনি। হাতে নেই টাকা। তাই মেলেনি খাবার। ওদিকে সংসারেও পাঠাতে পারছেন না এক পয়সা। তাই যে কোনও উপায়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথাই ভাবেন তিনি। সেই অনুযায়ী গত ৫ মে দিল্লি থেকে সাইকেলে চড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন আনসারি। সঙ্গে ছিলেন আরও সাতজন পরিযায়ী শ্রমিক। পাঁচদিন ধরে সাইকেল চালিয়ে অর্ধেক রাস্তা পৌঁছন তাঁরা। লখনউতে পৌঁছনোর পর স্থির করেন একটু বিশ্রাম নেবেন। সেই অনুযায়ী রাস্তার পাশে সাইকেল রেখে খাবার খেতে শুরু করেছিলেন প্রত্যেকে।
সেই সময় আচমকা একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে আনসারির দিকে ছুটে আসে। চালক নিয়ন্ত্রণ হারায়। আনসারির উপর দিয়ে পিষে বেরিয়ে গিয়ে একটি ডিভাইডারে ধাক্কা মারে গাড়িটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দুর্ঘটনা ঘটেছে দেখেই চালক গাড়ি থেকে নেমে আসেন। আনসারির সঙ্গীদের আর্থিক সাহায্য করতে রাজিও হন প্রথমে। তবে মুহূর্তের মধ্যে ভাবনায় বদল। আর্থিক সাহায্য করতে অস্বীকার করে অভিযুক্ত গাড়িচালক। ঘটনাস্থল ছেড়ে চলেও যায় সে।
ততক্ষণে অবশ্য এলাকায় স্থানীয়রা জড়ো হয়ে গিয়েছে। পুলিশের কাছেও পৌঁছে গিয়েছে খবর। পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আনসারির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এরপর তাঁর দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিহারের পূর্ব চম্পারণে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে। ঘাতক গাড়ি ও চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।