নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ১০দিন ধরে তাঁর বাড়ির প্রতি নজর রাখা হচ্ছিল আক্রমনের উদ্দেশ্যে। পুলিশকে তা জানিয়েও ছিলেন তিনি অথচ তারপরও তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ল দুষ্কৃতিরা। ঘটনার পর এলাকায় আসা এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিককে এমনটাই অভিযোগ করতে শোনা গেল সাংসদ অর্জুন সিংকে। জনসমক্ষেই বুধবার রাতে এমনই অভিযোগ করতে শোনা গেল সাংসদকে। যা শুনে কার্যত থমকে যেতে হয় ওই আধিকারিককে। পরে তিনি দুষ্কৃতিদের ধরার জন্য সময় চেয়ে নেন। প্রত্যুত্তরে জনতাকে বলতে শোনা যায় মানুষ মারা যাওয়ার পরও কী সময় নেবে পুলিশ?
বুধবার রাতের এই ঘটনায় এক মহিলা ও কিশোর সহ জখম মোট তিন জন। বোমাবাজির ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতকারীদের দিকে উঠছে আঙুল, অপরদিকে তৃণমূলের দাবী, তাদের কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিরা। রাতে ঘটনাস্থলে যায় র্যাফ ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন পুলিশ কমিশনার। এলাকা ঘুরে দেখেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ ও জয়েন্ট সিপি ধ্রুবজ্যোতি দে। সেই সঙ্গেই ঘটনাস্থলে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
বুধবার রাতে ভাটপাড়ায় রাত প্রায় ১২ টা নাগাদ শুরু হয় বোমাবাজি। পরপর আট থেকে দশটি বোম ছোঁড়া হয় বলে খবর। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা এই বোমা ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। বোমার আঘাতে অমিত তেওয়ারি নামে ১৪ বছরের এক কিশোর আহত হয় বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়াও এজ মহিলা সহ আরও ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের একজন ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনা স্থলে জগদ্দল থানার পুলিশ পৌঁছায়।
এই বোমাবাজির ঘটনা প্রসঙ্গে অর্জুন সিং দাবী করেন, তিনি বাড়িতে ঢোকার সময় ঘোষপাড়া রোডের মেঘনা মোড়ে বোমাবাজি শুরু হয়। হামলার পেছনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিজেপি সাংসদের দাবি, রাতে এলাকায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। পাল্টা শাসক দলের অভিযোগ, তাদের কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পুলিশের দাবী, এলাকায় লাগানো সিসি ক্যামেরাগুলি ভেঙে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। বোমাবাজির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তবে সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি ও পুলিশের নজরদারি চলছে এলাকায়।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের আগে বার বার উত্তেজনা ছড়াচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। ২ দিন আগে অর্থাৎ মঙ্গলবার আইএসএফ কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি অশোকনগর থানার গুমা বড় বামুনিয়া এলাকায় ঘটে। মঙ্গলবার রাতে একটি দলীয় কর্মীদের নিয়ে মিটিং চলাকালীন হঠাৎ করে তৃণমূল কর্মীরা চড়াও হয় এবং আচমকা আইএসএফ কর্মীদের মারধোর করে বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় চার আইএসএফ কর্মী আহত হয়। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবীতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে ভোর পৌনে চারটে নাগাদ অশোকনগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় আইএসএফ কর্মীরা। তবে বিক্ষোভকারীরা দাবী করেন যদি প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন আইএসএফ এবং বাম-কংগ্রেসের জোট সমর্থিত কর্মীরা।