নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার: বিজেপির শহর মন্ডল সভাপতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। খবর চাউর হতেই ছূটে আসনে বিজেপির নেতা কর্মী-সমর্থকরা, ঘটনায় সরাসরি আঙুল তোলেন শাসক শিবিরের দিকে। ঘটনার প্রতিবাদে দিনহাটা পাঁচ মাথার মোড় এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
জানা যায় বুধবার সকালে দিনহাটা শহরের ডাকবাংলো পাড়ায় পশু হাসপাতালের ভেতর ঘরের বারান্দায় তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বিজেপির শহর মন্ডল সভাপতি অমিত সরকারের। বিজেপির অভিযোগ, তাকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর এই ঘটনায় তৃণমূলের নেতৃত্ব জড়িত বলেও তাদের অভিযোগ।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের আরও অভিযোগ, কোনও ভাবে বিজেপিকে আটকাতে না পেরে খুনের রাজনীতি শুরু করেছে তৃণমূল। ঘটনা ঘিরে ক্রমশ বাড়তে থাকে উত্তাপ। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তেই মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অমিত ভার্মা, দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত ঐ পশু হাসপাতালে ছুটে আসেন। সেই সময় পুলিশ আধিকারিকদের ঘিরেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে দিনহাটা পাঁচ মাথার মোড় এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা এবং বন্ধ রয়েছে দিনহাটা শহরের সমস্ত দোকানপাট।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক। তিনি সরাসরি শাসক শিবিরকে এই ঘটনার জন্য ধিক্কার জানান। পাশাপাশি উদয়ন গুহকে তোপ দেগে বলেন, তিনি এই ধরণের হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন অনবরত। রতন বর্মণ, অলোক নিতাই দাসের হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি শাসক শিবির তথা উদয়নকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান। এদিন মন্ডল সভাপতিকে ঘুম থেকে ডেকে এনে নারকীয় ভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ করেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ। উদয়ন গুহ ও তাঁর দল দিনহাটায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে চাইছেন, তাঁর জবাব চান নিশীথ। সেইসঙ্গে দিনহাটাবাসীকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন এই সন্ত্রাসের বাতাবরণ দূর করতে যেন তারা এগিয়ে আসেন। এদিন এই মৃত্যুর বিষয়ে সিবিআই তদন্তের দাবীও তোলেন নিশীথ। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন এদিন।
যদিও এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে শাসক শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপির যিনি এই অভিযোগ করেছেন তাহলে তিনি অবশ্যই দেখেছেন। পুলিশ তাকে ইন্টারোগেশন করুক, আমি ঘটনা আপনাদের মুখেই শুনলাম। খোঁজ না নিয়ে আমি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না। যে কোনও মৃত্যু দুঃখ জনক। এখন তো নির্বাচন কমিশনের পুলিশ রয়েছে তারা তদন্ত করে ব্যাপারটা খোলসা করুক। কে বা কারা, কিভাবে কেন এই ঘটনা ঘটলো।
এদিকে বিধানসভা নির্বাচনে হাতে গনা বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন, ক্রমশই চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। তাঁর আগেই এইভাবে বিজেপির শহর মন্ডল সভাপতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার সেই উত্তাপ যে আরও বাড়িয়ে দিল, সেকথাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।