নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন বাংলার নির্বাচনের ইতিহাসে কুখ্যাত হয়ে আছে। সর্বাধিক হিংসা ও সর্বাধিক বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় জয় এসেছিল এই নির্বাচনে। তিন বছর আগের সেই নির্বাচন দেখেছে পুরুলিয়ায় বিরোধী সমর্থক হওয়ার অপরাধে কিশোরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে, দেখেছে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া বিরোধী মহিলা সমর্থকের শাড়ি খুলে নিয়ে মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে পেটাতে। ২০২৩ সালে, দেড়বছরের মাথায় আবারও আসবে পঞ্চায়েত নির্বাচন আর তার আগেই সন্ত্রাসের আগাম বাজনা বাজানোর অভিযোগ উঠল বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মন্ডলের গড় থেকেই। বীরভূম জেলার তৃনমূল সহসভাপতি আবদুর মান্নান জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। সব প্রার্থীই তৃনমূলের হবে। তার বাইরে কেউ মনোনয়ন জমা দিতে গেলে আর বাড়ি ফিরবেননা তিনি।
সোমবার লাভপুরের দারকা গ্রামে স্থানীয় বিধায়ককে সংবর্ধনা দেওয়ার কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন আবদুর মান্নান। ওই মঞ্চেই তৃণমূলে যোগ দেন স্থানীয় বেশ কিছু বিজেপি কর্মী। বক্তৃতা করার সময়ে তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি থেকে যাঁরা যোগ দিলেন, তাঁদের কারও মধ্যে যেন আর বিজেপি-র সত্তা না থাকে। সবাই মিলে হাততালি দিয়ে বলুন, আমরা আজ থেকে সবাই তৃণমূল।’’ ২০২৩ সালে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আর দেড় বছরের মধ্যে ভোট। আমরা প্রত্যেক বুথে বুথে একজন করে প্রার্থী ঠিক করব। ওই ভোটে আমার-তোমার বলে কিছু থাকবে না। সব প্রার্থীই তৃণমূলের হবে। অন্য কেউ যদি মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান, তা হলে তিনি আর লাভপুর থেকে ফিরে আসবেন না।’’
তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বোলপুরের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যে দলটি পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকারকে খর্ব করে দলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করতে চায়, সেই দলের নেতা এই কথা বলবেন এটা খুব স্বাভাবিক। গত পঞ্চায়েত ভোটেও তাঁরা এটা করেছিলেন। তার পরও বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। মানুষকে সন্ত্রস্ত করলে মানুষ তার জবাব দেবেন।’’ উল্লেখ্য এই বীরভূমেরই নেতা অনুব্রত মন্ডল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বলেছিলেন, যাঁরা ভোট দিতে যাবেন তাঁরা দেখবেন রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। বিতর্কিত সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই সদ্য প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ” দেখ খুলে তোর তিন নয়ন, খড়্গ হাতে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।”