নিজস্ব সংবাদদাতা: ১ মাসও গড়ালো না, ২৬৪ কোটি টাকার সেতু গন্ডাক নদীর উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল। পাটনা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে গোপালগঞ্জে এক মাস আগে এই সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই বৃষ্টির তোড়ে বুধবার ভেঙে পড়ল সেতুটি।
জানা গেছে উদ্বোধনের ২৮ দিনের মাথাতে ভেঙে পড়ল ২৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। নদীতে জলস্তর বাড়তেই ভেঙে পড়ল সেতু একাংশ৷ যে কাণ্ড নিয়ে ভোটের আগে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে বিহারে৷ প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে নীতীশ কুমার সরকার৷ সৌভাগ্যক্রমে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই৷
গত ১৬ জুন গন্ডক নদীর উপরে পূর্ব চম্পারনের সঙ্গে গোপালগঞ্জের সংযোগকারী ১.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সত্তরঘাট মহাসেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার৷ ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শুরু হওয়ার পর সেতুর কাজ শেষ হতে সময় লাগে ৮ বছর৷ খরচ হয় ২৬৪ কোটি টাকা৷ কিন্তু উদ্বোধনের ২৮ দিনের মাথাতেই এ দিন সেতুর মাঝের কালভার্টটি নদীর জলে তলিয়ে যায়৷ সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বে ছিল বিহার রাজ্য পুল নির্মাণ নিগম৷ ৮ বছর ধরে এই ১.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সাত্তারঘাট সেতুটি নির্মাণ করেছিল বিহার রাজ্য পুল নির্মাণ নিগম লিমিটেড। ১৬ জুন সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল এটি।
এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তোপ দাগতে ছাড়েননি লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। তিনি লিখেছেন, “৮ বছর ধরে তৈরি করা ২৬৩ কোটি টাকার সেতু ২৯ দিনে ভেঙে পড়ল। দুর্নীতির ভীস্ম পিতামহ নীতীশ জি এখন কিছু বলবেন না। সব দিক দিয়ে বিহারকে লুটছেন।” নীতীশকে খোঁচা দিয়ে টুইট করতে ছাড়েননি বিহার কংগ্রেসের প্রধান মদন মোহন ঝাও।
সাত্তারঘাট সেতুর মাধ্যমে গোপালগঞ্জ ও পূর্ব চম্পারণের মধ্যে যোগাযোগ হত। সেতু না থাকায় তা ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি পর্যবেক্ষক দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
ঠিক একমাস আগে উদ্বোধন হয়েছিল৷
আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব ট্যুইটারে লেখেন, ‘৮ বছরে ২৬৩.৪৭ কোটি টাকায় তৈরি করার পর গত ১৬ জুন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গোপালগঞ্জের সত্তারঘাট সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন৷ তার পর ২৯ দিনের মাথায় সেই সেতু ভেঙে পড়ল৷ খবরদার কেউ নীতীশজিকে দুর্নীতিপরায়ণ বলবেন না৷ ২৬৩ কোটি টাকা তো সামান্য অঙ্ক৷ ওনার পোষা ইঁদুররা এই পরিমাণ টাকার মদ্যপান করে!’
বিহারের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মদনমোহন ঝা ট্যুইটারে কটাক্ষ করে বলেন, ২৬৩.৪৭ কোটি টাকার সেতু ১৬ জুন উদ্বোধন হল, ১৫ জুলাইতে তা ভেঙে পড়ল৷ এবার এর জন্য ইঁদুরদের দোষারোপ করবেন না৷’
২০১৭ সালে বিহারের এক মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ইঁদুররা নদী বাঁধে গর্ত খুঁড়ছে৷ যার ফলে বাঁধগুলি দুর্বল হয়ে গিয়ে বিহারে বন্যা হচ্ছে৷ সেই প্রসঙ্গ তুলেই এ দিন খোঁচা দিয়েছেন বিরোধীরা৷বিহার সরকারের অবশ্য দাবি, সত্তারঘাট সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের একটি কালভার্ট জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে৷ মূল সেতুর কোনও ক্ষতি হয়নি৷