নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় এবার রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ২৬০০০ করোনা শয্যার মধ্যে বেশিরভাগটাই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কারন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের মতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে মহিলা ও বিশেষত বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। যে কারনে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যের মোট করোনা শয্যার ৬০ শতাংশ মহিলাদের জন্যই সংরক্ষিত করার কথা ভাবা হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার ডিরেক্টর অজয় চক্রবর্তী।
চক্রবর্তী জানিয়েছেন, যে ” বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট যার নাম ডেল্টা (delta variant) পরিবারের সকল সদস্যকে সংক্রমিত করছে। যদি বাচ্চারা আক্রান্ত হয় তবে তাদের মায়েদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আমরা পরিকল্পনা করছি যে হাসপাতালে একত্রে তাদের থাকার ব্যবস্থা করার। এবং যে সব ক্ষেত্রে বাচ্চার মায়েদের সংক্রমন থাকবে না অথবা তারা দ্রুত সেরে উঠবে সেই সব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। “
অজয় চক্রবর্তী আরও বলেন ” বাংলায় প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার খুবই কম। বাংলায় যখন করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রত্যেক দিন প্রায় ২০০০০ জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন তখন প্রত্যেক দিন মাত্র ২০০ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছিলেন। আমরা আন্দাজ করছি এটা খুব বেশি হলে ৫০০ তে পৌঁছতে পারে। তাই আমাদের বেড গুলির মধ্যে ৫ শতাংশ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (Critical care unit) ও ১০ শতাংশ হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (High dependency unit) এর জন্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। কিন্তু আমরা শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার কথা মাথায় রেখে ৫০০ টি পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (Paediatric Intensive care Unit) এবং ১০০০ টি হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (High dependency unit) রাখার কথা ভাবছি।”
পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে শ্রী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, যেসব শিশুরা ১ মাস বা তার কম বয়সী তাদের জন্য বাংলা জুড়ে স্পেশাল নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট (Special new born care unit) ও নিউ বর্ন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (New born intensive care unit ) ৬৮ টি করোনা বেডের ব্যবস্থা করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন শুধু শিশুর থেকেই নয়, পরিস্থিতিগত ভাবেও পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পেশার কারনে পুরুষদের বাইরে যেতে হচ্ছে, সুপার স্প্রেডার হিসাবে তাঁরা ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন যা সাধারণ গৃহবধূ বা গৃহস্থ তরুণীদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। টিকার অপ্রতুলতা, পরিকাঠামোর অভাব ইত্যাদির কারনে গ্রামাঞ্চলে পরিপূর্ণ টিকাকরন সম্ভব হয়নি। সেখানকার পুরুষেরা দুরদুরান্তরে গিয়ে টিকা নিলেও বেশিরভাগ মহিলাদের পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠছেনা। ফলে তাঁদের পুরুষদের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে।