অশ্লেষা চৌধুরী: মহড়া চলাকালীন দুর্ঘটনা, বন্দুকের নল ফেটে মৃত্যু বিএসএফ জওয়ানের। ঘটনা ঘিরে দানা বাঁধছে সন্দেহ। নিহত জওয়ানের নাম সায়ক ঘোষ। তিনি বাংলার উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরের বাসিন্দা। তিনি জম্মুতে কর্মরত ছিলেন। সেখানেই মঙ্গলবার এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবারও বন্দুক চালানোর মহড়া দিচ্ছিলেন সবাই। সায়কও ছিলেন তাতে। হঠাৎই গুলি চালানোর সময় তাঁর বন্দুকের ব্যারেলে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সায়ক।
এদিন রাতেই সায়কের বাড়ী বীজপুর থানার অন্তর্গত কাম্পা পঞ্চায়েতের নাগদা গ্রামে তাঁর মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছায়। কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সায়কের বাবা নিজেও বিএসএফে কর্মরত ছিলেন। তবে বন্দুকের নল ফেটে ছেলের মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিটে পারছেন না তিনি। দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সীমান্তে শত্রুপক্ষের আক্রমণে বা গুলির লড়াইতে শহীদ হন অনেক জওয়ান, কিন্তু এভাবে মহড়া চলাকালীন একজন জওয়ানের দুর্ঘটনাজনিত এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষ সবার একটাই প্রশ্ন, কোনও উদাসীনতার ফলে এই ঘটনা ঘটেনি তো? সেনাবাহিনীর বন্দুক তো ভালভাবে পরীক্ষা করা হয়। তাহলে?
আজ বুধবারেই সম্ভবত বাড়ী আসবে সায়কের নিথর দেহ। আগামী মার্চ মাসে বাড়ী আসার কথা ছিল তাঁর, কিন্তু চিরতরে ছুটি নিয়ে চিরনিদ্রায় মগ্ন হয়ে এদিনেই ফিরে আসছেন মাত্র দুবছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া সায়ক। গ্রামেই শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে বিএসএফ জওয়ানের।
আর এই ঘটনা কিন্তু ফের একবার নিজের দেশেই সেনা জওয়ানদের নিরাপত্তার অভাব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। গতবছরের শেষের দিকেও মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দুই সেনা জওয়ান। সেনা ছাউনির দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয় তাঁদের। সেদিন রাতে আচমকাই ভেঙে পড়ে ব্যারাকের দেওয়াল। তার তলায় চাপা পড়ে যান জওয়ানরা। এই ঘটনায় আরও এক জওয়ান গুরুতর আহত হন। এই সেনা ছাউনি বিল্লাওয়ার পুলিশ স্টেশনের খুব কাছেই অবস্থিত। জম্মু কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার মাছেডীতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সেইসময়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠেছিল, নিজের ঘরেই সেনাদের নিরাপত্তা নিয়ে। আর এদিনের এই ঘটনা কিন্তু আবারও একবার সেই প্রশ্নই জাগিয়ে তুলছে সায়কের পরিবার ও গ্রামবাসী সহ সকরের মনে।