নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছিলেন, রবিবার রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ অথবা টর্চ জ্বালাতে। সেই মত বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের আলো নিভিয়ে মোমবাতি আর প্রদীপ মালায় সাজিয়েছিলেন হাসপাতাল চত্বর। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হয় সেই ছবি। আর তারপরই হাসপাতালের দায়িত্বরত মেডিক্যাল অফিসারকে শো-কজ নোটিশ ধরিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তা। ঘটনাটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে জানালেন রাজ্যপাল।
যদিও সরকারের যুক্তি প্রধানমন্ত্রী আলো জ্বালাতে বলেছিলেন বাড়িতে। হাসপাতাল জরুরি পরিষেবার মত স্পর্শকাতর এলাকা তার আলো নেভানো যায়না। তাছাড়া রবিবার রাতে বেলপাহাড়ি হাসপাতালে বহু চিকিৎসাধীন রোগী থাকা সত্বেও আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়। কোনও হাসপাতালে ওই কর্মসূচি পালনের সরকারি নির্দেশ না থাকা সত্বেও বেলপাহাড়ি হাসপাতালের কর্মীরা তা পালন করেন। জানা যায়, সেই সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩২ জন রোগী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আবার তিন জন সদ্যোজাত ও ছ’জন আসন্নপ্রসবা ছিলেন। তবু রবিবার রাত ৯টা বাজতেই আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালের। গোটা হাসপাতাল ভবন সাজানো হয়ে প্রদীপ ও মোমবাতি দিয়ে। নরেন্দ্র মোদী ঠিক যেমন বলেছিলেন তেমন ভাবে পালন করা হয় ৯ মিনিট।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয় বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার তীর্থপ্রসাদ চক্রবর্তীকে। তাতে জানতে চাওয়া হয়, কার নির্দেশে আলো নেভানো হল আর কেই বা মোমবাতি, প্রদীপ বাবদ অর্থ খরচ করল? একই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছে কে এসব জিনিস কিনেছে কিংবা কার অনুমতিতে সেই ছবি, ভিডিও তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাঠানো এই নোটিসের জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে বলা হয়।
শুক্রবার সেই শো-কজ নোটিসের ছবি দিয়ে টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার জন্য এই কারণ দর্শানোর নোটিস দুর্ভাগ্যজনক।প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর ওই কর্মসূচি ঘিরে প্রথম থেকেই রাজনৈতিক চাপানউতোর চলে রাজ্যে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই কর্মসূচির বিরোধিতাও করেছেন। সরাসরি না বললেও এই কর্মসূচি নিয়ে তিনি যে সন্তুষ্ট নন তা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এরপরই স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশেই ওই হাসপাতালের বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে ফেলা অবিবেচকের মতো কাজ কেন করা হল তাই জানতে চাওয়া হয়েছে শো-কজে। আর তাকেই দুর্ভাগ্যজনক বলে বিতর্ক উসকে দিলেন ধনকড় ।