নিজস্ব সংবাদদাতা: তিন ধরেই গ্রামে চলছে বোমা বাজি। দুই গোষ্ঠীর পারস্পরিক রেষারেষি তুঙ্গে। গ্রামে মোতায়েন পুলিশ। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলনা। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে শাসক দলের দুই ‘গোষ্ঠীর কোন্দল’-এর জেরে প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে বোমা মেরে, কুপিয়ে গলার নলি কেটে খুন করা হল। ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজের অনুগামীদের সঙ্গে বসেছিলেন বিষ্ণুপুর ব্লকের উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শেখ বাবর আলি ওরফে বাবলু। তাঁর অনুগামীদের দাবি, সেই সময় তাঁদের ঘিরে ধরে রহিম মণ্ডলের দলবল। যিনি বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। অভিযোগ, বাবর ও তাঁর অনুগামীদের লক্ষ্য করে সকেট বোমা ছোড়া হয়। বাধ্য হয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন বাবর। তা টের পেয়ে শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে বাড়ির ভিতর ঢুকে রহিমের লোকজন বারবের মুখে বোমা মারে বলে অভিযোগ। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে তরোয়াল দিয়ে বাবরের গলা কেটে দেওয়া হয়।
বাবরের অনুগামীদের অভিযোগ, রাতে তাঁদের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। পুলিশ না পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো এলাকায় রহিমের দলবল তাণ্ডব চালায়। পরে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও বারবের অনুগামীদের দাবি, প্রকৃত দোষীদের কাউকে ধরেনি পুলিশ। বরং হামলার সঙ্গে জড়িত না থাকা লোকজনদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
দলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে যে এই ঘটনা ঘটেছে, তা পুরোপুরি নস্যাৎ করেনি তৃণমূল। তবে দলের মুখ বাঁচাতে জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা জানান, ‘মর্মান্তিক’ ঘটনার বিষয়ে শুনলেও পুরোটা তাঁর জানা নেই। দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাবর ও রহিমের সম্পর্ক কোনওদিনই ‘মধুর’ ছিল না। ইদের সন্ধ্যায় তা চরম আকার ধারণ করে।
ঘটনায় প্রথম দিকে নাম জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয় সিপিএমের। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃনমূল নেতা শ্যামাপদ মুখার্জী অভিযোগের আঙুল তোলেন সিপিএমের দিকে। সিপিএম জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন,” গত তিনদিন ধরেই বোমা বাজি চলছে। দলের দুই গোষ্ঠীর বখরা নিয়ে লড়াই। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন, অথচ কিছুই করতে পারলনা! আর এখন সিপিএমের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেদের লুটের রাজত্ব আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে।” ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় আতঙ্ক রয়েছে।