নিউজ ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরেই বামপন্থী মনোভাবাপন্নদের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটাই কথা, “বাঘ ফিরছে জেলায়, ফেউরা ঢুকছে ডেরায়।” সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ৯বছর পর পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থানা এলাকায়।চন্দ্রকোনা রোডের নিজের বাড়িতে ফিরছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এই এলাকার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ আর তাতেই উল্লাসে, উৎসাহে ফেটে পড়েছেন বামপন্থী কর্মীরা বিশেষ করে তরুন সম্প্রদায়। উৎসাহ আর উদ্দীপনায় তারা ফুটছেন টগবগ করে। এলাকায় তাঁকে সম্বর্ধনা আর স্বাগত জানাতে চলছে মানসিক প্রস্তুতি আর তার আগেই চলে এসেছে ২৬ শে নভেম্বরের সাধারণ ধর্মঘট। বলতে দ্বিধা নেই সেই সুশান্ত ঘোষের নামেই ১৪ আনা ধর্মঘট সফল হয়ে গেল।
এদিন সকাল হওয়ার আগেই ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়ে রাস্তায় নামে সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীরা। শহরের বিভিন্ন বাজার এবং ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বন্ধের সমর্থনে মিছিল করেন তারা। চন্দ্রকোনারোডের চৌমাথা এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। বিক্ষোভভে আটকে যায় বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর গামী এবং ঘাটাল ও সারেঙ্গা গামী একাধিক সরকারি বাস এবং লরি। যদিও পরে পুলিশবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অন্যদিকে দুর্লভগঞ্জ, বিলা, সাতবাঁকুড়া, রসকুন্ডু, আমশোল, উড়িয়াসাই, নয়াবসত, নলবনা, ঘাঘরা, সাঁইনাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় এই বন্ধের প্রভাব লক্ষ্য করা যায় । বনধ সমর্থকরা জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড করে ফলে দীর্ঘক্ষন গাড়ি আটকে থাকে। অবরোধ চলে কুবাই সেতুতেও। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে সেতু থেকে সরানো হয় অবরোধকারীদের। দোকানপাট, হোটেল, গ্যারেজ অবশ্য বন্ধই ছিল।
চন্দ্রকোনারোডের বাস টার্মিনাসে সকাল থেকেই দাঁড়িয়েছিল সমস্ত বেসরকারি বাস। যাত্রীদের দেখাও মিলেনি। তবে ধর্মঘট কে উপেক্ষা করে চলে সরকারি বাস। যদিও সরকারি বাসের ড্রাইভার দের লক্ষ করা যায় হেলমেট পরে বাস চালাতে । বেসরকারি বাস বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীরা ভিড় জমিয়েছিলেন সরকারি বাসে ওঠার জন্য। যাত্রীরা রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় পড়েন তারা। এরই পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল শালবনী, গড়বেতা, গোয়ালতোড়েও বনধ হয়েছে ভালই।
বনধের বিরোধিতায় রাস্তায় নামেনি বিজেপি বা তৃনমূল। পুলিশও তেমন জোর করেনি। যতটা সম্ভব সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করেছে। এই পুরো এলাকা জুড়েই প্রভাব ছিল সুশান্ত ঘোষের। সমর্থকদের দাবি সেই প্রভাব অক্ষুন্ন রয়েছে। তিনি আসছেন তাই বনধ বিরোধিতায় প্রকট হওয়ার সাহস দেখায়নি শাসক। সম্ভবত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফিরছেন ঘোষ। তার আগেই তার এলাকায় বনধের এই সাফল্য নিশ্চিতভাবেই তাঁর ভালো লাগবে। ছবি ও তথ্য সংযোজন: সুমন পাত্র