নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০১৬ বিধানসভায় দাঁতন বিধানসভায় তৃনমূল প্রার্থী বিক্রম প্রধানের জয় এসেছিল কাছাকাছি ১৮হাজার ভোটে। ২০১৯ লোকসভায় এই দাঁতন বিধানসভা থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ লিড নিলেন ৬হাজার ভোটে! ৩বছরে ২৪হাজার ভোট হারিয়েছেন বিক্রম প্রধান? না, যদি এমনটা দাবি করা হয় যে দেশের নির্বাচন আর রাজ্যের নির্বাচন ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে হয় তাহলেও বিক্রম প্রধান যে জনপ্রিয়তা অনেকটাই হারিয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা কারন সোমবার দাঁতন বিধানসভার নীলদাতে বিক্রম প্রধানের সমর্থনে নির্বাচনী বক্তব্য রাখতে এসে অভিষেক ব্যানার্জীকে বলতে হয়েছে, ভোট দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, আপনাদের প্রার্থী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টিম যেমন পি.কের সাহায্য নিয়েছেন তেমনই প্রার্থীদের নাড়ি নক্ষত্র আর জন সমর্থনের হাল হককিৎ জানিয়েছে পি.কে। আর সেই মাপকাঠিতে ২০১৬ বিক্রম প্রধান আর ২০২১ বিক্রম প্রধান এক নয়। মূলত তিনটি জিনিস বিক্রম প্রধান এবং তাঁর অনুগামীদের জনপ্রিয়তা হ্রাস করেছে। প্রথমতঃ একটি বিস্তীর্ণ এলাকার অধিকাংশ মানুষেরই অভিযোগ বড়সড় কোনও উন্নয়ন হয়নি।
দ্বিতীয়ত: ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আমফানের ক্ষতিপূরণ, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়া ইত্যাদি প্রশ্নেও দাঁতন এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। মোহনপুর ও দাঁতন-২ ব্লকের পানচাষীরা লকডাউনের সময় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ এই সময় কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। তৃতীয় এবং মারাত্মক অভিযোগ হল দাঁতন এলাকায় ঘন ঘন রাজনৈতিক হিংসা হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে যার পেছনে ১৪আনা দায়ি শাসকদল।
যদিও তৃনমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ খন্ড করে এগুলিকে বিজেপির অপপ্রচার বলা হয়েছে। যদি তা হয়েও থাকে তবে এটা মানতে হবে যে সেই ‘অপপ্রচার’ মানুষ গ্রহণ করেছে এবং তা করেছে বলেই অভিষেক ব্যানার্জীকে বলতে হয়েছে, দাঁতনে আপনাদের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন দাঁতন এবং গড়বেতার আমলাশুলিতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সভা করার পাশাপাশি মেদিনীপুর শহরে প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে একটি রোড-শো তে অংশ নিয়েছিলেন যা রীতিমতো জমিয়ে দিয়েছে তৃনমূল। সিপাহী বাজারের গির্জা থেকে জগন্নাথ মন্দির অবধি এই রোড-শোতে উজাড় করে কর্মী সমর্থকরা অংশ নিয়েছেন। পঞ্চুরচক গোলকুয়া হয়ে স্কুলবাজারের রাস্তার দুপাশে অগণিত মানুষ ভিড় করেছেন এই বর্ণময় রোড-শো দেখার জন্য।