ওয়েব ডেস্ক : আমেদাবাদের করোনা হাসপাতালের অগ্নিকান্ডের ২ দিনের মধ্যে ফের অন্ধ্রপ্রদেশের কোভিড কেয়ার সেন্টারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। ঘটনায় কনপক্ষে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে এই মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায়। কি থেকে আগুন লেগেছে তা এখনও পর্যন্ত বোঝা না গেলেও দমকলের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান শর্ট সার্কিট থেকেই ওই কোভিড কেয়ার সেন্টারে আগুন লেগেছে৷ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একই ছবি ফুটে উঠছে। কখনও হাসপাতাল, কখনও আবার কোভিড কেয়ার সেন্টার হাসপাতাল, কোভিড সেন্টারগুলির গাফিলতির জেরে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। আমেদাবাদের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ২ দিনের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই সরকারের গাফিলতির প্রশ্ন উঠছে।
জানা গিয়েছে, বিজয়ওয়াড়ায় দিন দিন সংক্রমণের মাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে বিজয়ওয়াড়ার একটি হোটেলে কোভিড কেয়ার সেন্টার খুলেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। শনিবার গভীর রাতে আচমকা ওই কোভিড কেয়ার সেন্টারে আগুন লেগে যায়। এর ফলে এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকলের কর্মীরা ১০ টি ইঞ্জিন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও আগুন এতটাই তীব্র যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩০ জনকে উদ্ধার করলেও এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রচুর মানুষ আটকে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই শোকপ্রকাশ করে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটে তিনি লিখেছেন, “বিজয়ওয়াড়ার একটি কোভিড কেয়ার সেন্টারে আগুন লাগার কথা শুনে আমি মর্মাহত। এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। জখমরা যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন তার জন্য প্রার্থনা করছি। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁকে সমস্ত রকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।” পাশাপাশি কোভিড কেয়ার সেন্টারের অগ্নিকাণ্ডের জেরে করোনা রোগীদের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আধিকারিকদের সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার করোনা পরিস্থিতিতে আমেদাবাদের নভরংপুরার শ্রে সুপার স্পেশ্যালিটি হসপিটালটিকে আপাতত করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকা হাসপাতালের আইসিইউ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই ধোঁয়া থেকে মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আইসিইউ ও সংলগ্ন ওয়ার্ড। গোটা হাসপাতাল ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে প্রাণ বাঁচাতে অসুস্থ অবস্থাতেই হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনেক রোগী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন। তবে উদ্ধারকার্য শুরু হওয়ার আগেই তীব্র আগুনে এক্কেবারে পুড়ে যান আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন ৮ করোনা আক্রান্ত রোগী। এরপর তাদের উদ্ধার করে রাতেই অন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের মৃত্যু হয়৷ তবে বেসরকারি হাসপাতাল, কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলির এহেন গাফিলতিতে স্বাভাবিকভাবেই রোগী পরিবারের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।