ওয়েব ডেস্ক : আর মাত্র হাতে গোনা ৭ মাস, তারপরই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গে আধিপত্য বিস্তারে আপাতত বিধানসভা নির্বাচনকেই পাখির চোখ করেছে বিজেপি। সেকারণে এরাজ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব ক্ষতিয়ে দেখতে বুধবারই দুই দিনের দক্ষিণবঙ্গ সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে রাজারহাটের একটি হোটেলে থাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। এরপর বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি কলকাতা থেকে অন্ডাল বিমান বন্দর হয়ে বাঁকুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাঁকুড়ায় এদিন তাঁর পর পর বেশ কয়েকটি বৈঠক রয়েছে৷ ফলে বৈঠক শুরুর আগে এদিন বাঁকুড়া পৌঁছে প্রথমেই বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মালা প্রদান করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপরই এদিন সাংবাদিক বার্তার মাধ্যমে মমতা ব্যানার্জী এবং রাজ্য সরকারকে একহাতে নিলেন অমিত শাহ।
এদিন অমিত শাহ বলেন, ” আজ ভগবান বিরসা মুন্ডার প্রতিমাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়ে আমার দুদিনে বাংলার সফরের শুভারম্ভ হয়েছে। আমি কাল রাত থেকেই বাংলায় আছি। যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই এরকম উৎসাহ দেখা গিয়েছে। একদিকে, মমতা ব্যানার্জীর প্রতি মানুষের ক্ষোভ দেখা গিয়েছে। তেমনই, আরেকদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি বাংলার মানুষের শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা দেখা গিয়েছে। আর এটা দেখে আমি বলতে পারি যে, আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাংলায় বিজেপির সরকার হবে।”
এদিন তিনি বলেন, ” যেভাবে বাংলার দরিদ্র এবং সমস্ত মানুষের প্রতি ভারত সরকার কাজ করেছে, এবং প্রকল্প শুরু করেছে, সেটি সবার কাছে এসে পৌঁছায় নি। আমি যদি এই অঞ্চলের কথা বলি, তাহলে এখানকার আদিবাসী বহুল অঞ্চলে ভারত সরকার বাড়ি বানানোর জন্য আবাসের টাকা দিয়েছিল। কিন্তু সেটা তাঁদের কাছে পৌঁছায়নি। কৃষকদের ৬ হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে গোটা দেশে, কিন্তু এখানে সেটা পৌঁছায়নি। প্রতিটি গরিব পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পায়। সেটাও এখানে পায়নি। ভারত সরকারের ৮০ এর বেশি যোজনা, যেগুলো গরিব মানুষের জন্য আর গরিবদের স্বার্থে শুরু করা হয়েছে, সেগুলোও এখানে শুরু হতে দেয়নি মমতা সরকার।”
এরপরই অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিয়ে বলেন, “মমতা ব্যানার্জী ভাবছেন, এই প্রকল্প গুলি রুখে দিয়ে তিনি রাজ্যে বিজেপিকে রুখতে পারবেন। কিন্তু সেটা হবে না। আমি আপনার কাছে অনুরোধ করে বলছি, ভারত সরকার দ্বারা দেওয়া গরিবদের টাকা তাঁদের কাছে পৌঁছাতে দিন, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার করে টাকা পৌঁছাতে দিন, গরিবদের বিনামূল্যে কেন্দ্র সরকারের চিকিৎসার ব্যবস্থা পৌঁছাতে দিন, তাহলে গরিবেরা আপনার জন্য ভাববে।” গত কয়েকমাসে রাজ্যে একাধিক বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। এদিনের সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “যেভাবে বিজেপির কর্মীদের উপর মমতার সরকার অত্যাচার চালাচ্ছে, আমি দেখতে পারছি। আর আমি নিশ্চিত রুপে বলছি যে, মমতা সরকারের বিদায়ী ঘণ্টা বেজে গিয়েছে আর আগামী দিনে এখানে বিজেপির সরকার গঠন হবে। দুই তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসবে।”