নিউজ ডেস্ক: এ যেন যিনি রক্ষক, তিনিই ভক্ষক। শিলিগুড়ি শহরে একের পর এক এটিএম ও ব্যাঙ্ক লুট কাণ্ডে এক ভারতীয় সেনার জওয়ানকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ, গ্রেপ্তার হয়েছে আরও একজন। ধৃত ওই জওয়ানের নাম প্রবীণ কুমার। শিলিগুড়ির কমিশনার ডিপি সিং জানান যে ঘটনায় ধৃত প্রবীন কুমার ভারতীয় সেনার জাঠ রেজিমেন্টের এই জওয়ান সিকিমে ল্যান্স নায়েক পদে কর্মরত ছিল। তবে বর্তমানে সে সেনাবাাাহনী থেকে বিতাড়িত বলে জানা গেছে। এর সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছে রাহুল কুমার নামে আরও এক ব্যক্তি। এই দুজনেই হরিয়ানার বাসিন্দা।বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ কমিশনার ডি পি সিং জানিয়েছেন, গত ১২ জানুয়ারি, ১৮ জানুয়ারি এবং ২৪ তারিখ রাতে বিভিন্ন রাষ্টয়াত্ব ব্যাঙ্কের এটিএম ভাঙ্গার অভিযোগ আসে। উল্লেখ্য ১২ই জানুয়ারি কোর্টমোড়ে এসবিআই ই-কর্ণারে এটিএম লুটের চেষ্টা হয়। ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় এটিএমের নিরাপত্তারক্ষী সাবিরুল হকের ওপর।
এরপর ১৬ জানুয়ারি রাতে পানিট্যাঙ্কি মোড়েও দুটি ব্যাঙ্ক লুটের চেষ্টা হয়।তারপর অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। তবে, পুলিশ সফল হয় গত ২৫ জানুয়ারি। ওই দিন দেশবন্ধুপাড়ায় একটি এটিএম লুটের সময় প্রবীণ কুমারকে ধরে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ।প্রবীণের সঙ্গে রাহুল কুমার নামেও একজনকে ধরা হয়।ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশ হেপাজতে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুলিশ কমিশনার ডিপি সিং সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ধৃত প্রবীণ কুমার এর আগেও বেশ কয়েকজায়গায় এমন লুটের চেষ্টা চালিয়েছে।বিষয়টি সেনা আধিকারিকদেরও জানানো হয়েছে।ধৃতদের কাছ থেকে এটিএম ও ব্যাঙ্ক লুটের জন্য ব্যবহৃত বেশকিছু সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে এও জানা গেছে ধৃতদের কাছ থেকে নগদ এক লক্ষ টাকাও উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে প্রবীন কুমার সম্প্রতি গুরগাঁওয়ে এটিএম লুঠের চেষ্টায় গ্রেফতার হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি বলেন মাদকদ্রব্য পাচারের সাথে যুক্ত মেন মাথা ও কিছু লিঙ্ক ম্যান ধরা পড়লেও মাদক দ্রব্য পাচারের যে শৃঙ্খল রয়েছে, তা ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরি এ ব্যাপারে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গোটা বিষয়টি সেনা অফিসারদের জানানো হয়েছে।
পুরো ঘটনায় রীতিমত চক্ষু চড়ক গাছ পুলিশের! সেনা জওয়ানের সঙ্গে যোগ সাজশে শিলিগুড়ি শহরে একটি বড়সড় চক্র সংগঠিত হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই চক্রে আর কারা কারা জড়িত সেই তত্ত্ব তল্লাশ করতেই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ধৃত ২জনকে। ব্যাঙ্ক অথবা এটিএম লুট, মাদক পাচারের পাশাপাশি আর কোন কোন ক্ষেত্রে এই অপরাধী চক্র সামিল চলছে তারও খোঁজও।
এদিন পুলিশের তরফে এও জানানো হয়েছে যে প্রয়োজনের তুলনায় শিলিগুড়ি শহরে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা অত্যন্ত কম। সারা শহরে যেখানে দু থেকে আড়াই হাজার ক্যামেরার প্রয়োজন সেখানে রয়েছে মাত্র আড়াইশ মত। পুলিশের নিজস্ব তহবিল এই মুহূর্তে যথেষ্ট না থাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে শহরের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে পুলিশকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে।