Homeএখন খবরস্বচ্ছ ভারত মিশন ও সিকিম মডেল নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষনে ভারত সরকারের আমন্ত্রনে...

স্বচ্ছ ভারত মিশন ও সিকিম মডেল নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষনে ভারত সরকারের আমন্ত্রনে গ্যাংটক যাচ্ছেন সবংয়ের অরিজিৎ

অরিজিৎয়ের কাজ এবং অরিজিৎ (ইনসেটে )

নিজস্ব সংবাদদাতা: আপনাকে যদি বলা হয় আপনার শৌচাগারের সঙ্গে আপনার একটা ফটো শ্যুট করা হবে। আপনি নিশ্চিতভাবেই রাজি হবেননা। অন্ততঃ সঙ্গে সঙ্গে তো নয়ই। কিন্তু যদি সিকিমের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম বাসিলাখায় গিয়ে কেউ এমন আবদার করে তবে ওই গ্রামের ১২০টি পরিবার টানা হেঁচড়া শুরু করে দেবে ফটোগ্রাফারকে নিয়ে এবং প্রত্যকেই দাবি করবে তাদের শৌচাগারের সঙ্গে তাদের পোজের একটা ছবি দেওয়ার জন্য। না , এটা শুধুই বাসিলাখা নয়, সিকিমের যে কোনও গ্রামে , যে কোনও পরিবারেই মিলবে এই ছবি । পরিবার গুলি তাদের টয়লেট হাঁ করে খুলে দেবে ছবি তোলার জন্য আর দেখতে পাওয়া যাবে কমোড বসানো ঝাঁ চকচকে টয়লেট। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে এই হল সিকিম মডেল যা কিনা নরেন্দ্র মোদি আর অমিত শাহের গুজরাটও করে উঠতে পারেনি।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সিকিমকে বিপিএল পরিবার মুক্ত এবং সিকিমের পরিবার মানেই পাকা বাড়িওয়ালা পরিবার। গত ২২বছরের মূখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং ইতিমধ্যেই গ্রীন সিকিমের তকমা পেয়ে গেছেন। পুরো সিকিম প্লাস্টিক মুক্ত, সিকিমের কোথাও কোনও সাধারন স্থলে ধূমপান করতে দেখতে পাওয়া যায়না। এমনই সিকিমকে স্বচ্ছ ভারতের মডেল বলে বেছে নিয়েছে  ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন ‘ সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্স অফ ট্রেনিং’ বা সিসিআরটি। সারাদেশ থেকে মোট ৪৮জনকে বাছাই করে পাঠানো হচ্ছে সিকিমে। উদ্দেশ্য ৩দিনের একটা প্রশিক্ষনের পাশাপশি হাতে কলমে শিখে আসুন সিকিমের ওই বাস্তবায়িত স্বপ্নকে এবং ছড়িয়ে দিন গোটা দেশেই। ওই ৪৮জনের মধ্যেই এরাজ্যের ২জন সুযোগ পেয়েছেন। এঁর মধ্যেই রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং পশ্চিম চক্রের আশাপুরা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অরিজিৎ দাস অধিকারী। অপরজন হুগলি সদর চক্রের খামারপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নীলকমল মাইতি।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সিসিআরটি কেন অরিজিৎ কেই বেছে নিল ? এর উত্তর ধরা রয়েছে গত প্রায় ২দশক ধরে অরিজিৎয়ের অধ্যবসায় ও কর্মকাণ্ডে। তখন অরিজিৎ অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার  শ্রীরামপুর চক্রের চকগাড়ুপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সিসিআরটি উদ্যোগ নিয়েছিল শিশুদের পঠন পাঠনে বৈচিত্র্য , আনন্দ ও সরলীকরণ করতে পুতুলের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান। তখন থেকেই সিসিআরটির সঙ্গে পথ চলা শুরু হয়েছিল। শুধুই নিজের স্কুলে নয় পাশাপাশি অন্য স্কুলের শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষিত করার কাজ শুরু হয় ২০০০ সালে। পুতুল দিয়ে পাঠদান সহ প্রশিক্ষণের নানান বিষয়ে ইতিমধ্যে দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে তিন জেলায় এই উদ্যোগকে ছড়িয়ে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একমাত্র জেলা সম্পন্ন ব্যক্তি  ( ডি. আর .পি .) অরিজিৎ দাস অধিকারী । ছুটির দিনগুলোতে নানান স্কুলে গিয়ে ছোটদের নানান ধরনের পুতুল তৈরির প্রশিক্ষণে ব্যস্ত থাকেন । শিক্ষার্থীদের পঠন পাঠনের সাথেসাথে ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের শিক্ষা কি কি কারনে ও কি কি ভাবে করা যায় সেই চেষ্টায় সর্বদা নিয়োজিত  । সেই লক্ষ্য পুরনে নানান সময় জেলা শিক্ষা দপ্তরের ।অনুমতি ক্রমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছেন।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সিকিম যাত্রা অবশ্য অন্য রকম চ্যালেঞ্জ। পঠন পাঠনের বাইরে গিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি নির্মল বাংলা গড়ায় তাঁকে ভিন্ন উদ্যোগে অবতীর্ন হতে হবে এবার। যা কিছু জানাবেন তা ফিরে এসে হাতে কলমে শেখাতে হবে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের। সবংয়ের তেমাথানী বিবেক নগরের বাসিন্দা অরিজিৎ জানিয়েছেন, ” কাজটা অন্যরকমের ঠিকই তবে গত ২০ বছরের অভিজ্ঞতা আমাকে অনেকটাই সাহায্য করবে। আর অন্যরকম কাজে অন্যরকম থ্রিল থাকে আমি এখন সেটাই অনুভব করছি। তৈরি হচ্ছি ১৫-১৭ফেব্রুয়ারির জন্য।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আর অরিজিৎ সিসিআরটিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন এরকম কাজে তার ওপর আস্থা রেখে এই প্রশিক্ষনের জন্য নির্বাচিত করার জন্য। পাশাপাশি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাঁতরার প্রতি কারন তিনি এই যাত্রাকে মঞ্জুর করে ছুটি দেওয়াতেই সম্ভব হচ্ছে এই জার্নি। 

RELATED ARTICLES

Most Popular