Homeএখন খবরফের বেপরোয়া গতির বলি বন্য প্রাণ, গাড়ির ধাক্কার মৃত্যু চিতার

ফের বেপরোয়া গতির বলি বন্য প্রাণ, গাড়ির ধাক্কার মৃত্যু চিতার

অশ্লেষা চৌধুরী: জাতীয় সড়কে ফের দুর্ঘটনার কবলে পড়ল চিতা। গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় চিতাটির। দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যায় বাগডোগরার হাঁসখোয়া চা বাগানের কাছে টুনামোড়ে।এদিন স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সড়কের ওপর চিতাটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ ও বন দপ্তরে খবর দেওয়া হয়। বনকর্মীরা চিতাটির দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান। বনদপ্তরের প্রাথমিক অনুমান, কোনও গাড়িতে চাপা পড়ে চিতাটির মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে বনদপ্তর জানিয়েছে।

নতুন বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পথ দুর্ঘটনার শিকার হল চিতা। এর আগে বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১লা জানুয়ারি রাতের আঁধারে জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় জখম হয় জোড়া চিতা। এমনকি গাড়িটিও উল্টে গিয়ে তাতে থাকা ৫ জন যাত্রী জখম হন। দুর্ঘটনাটি ঘটে বানারহাট এলআরপি মোড়ের কাছে ৩১সি জাতীয় সড়কে।

জানা যায়, নতুন বছরের প্রথমদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে কোচবিহারের পাঁচজন বাসিন্দা ডুয়ার্সের ঝালং সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ জাতীয় সড়ক ধরে ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা। এদিন বানারহাট এলাকা পার হতেই রাস্তায় দু’টি চিতা চলে আসা। দ্রুত গতিতে গাড়িটি চিতা দুটিকে ধাক্কা মারার পর উলটে যায়। দুর্ঘটনায় গাড়ির পাঁচজন যাত্রীই আহত হন। তাঁদের বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এই দুর্ঘটনায় একটি চিতা সামান্য আঘাত পেলেও অন্যটির বেশ গুরুতর আঘাত লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বানারহাট থানার পুলিশকর্মী এবং বন্যপ্রাণ শাখার বিন্নাগুড়ি রেঞ্জের কর্মীরা। উপস্থিত হন অনারারি ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরীও। প্রায় রাতভর চেষ্টার পর ভোরের দিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে গুরুতর জখম চিতাটিকে জাল দিয়ে বন্দী করে উদ্ধার করা হয়। তবে ঝোঁপে আশ্রয় নেওয়া অপর চিতাটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হননি বনকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, এইভাবে জাতীয় সড়ক লাগোয়া চা বাগান বা জঙ্গল এলাকা থেকে যখন তখন বন্য প্রাণীরা বেরিয়ে আসায় প্রায়ই পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণীগুলো; বিশেষ করে চিতা ও হাতি। গতবছর ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বৃহস্পতিবার সকালে আলিপুরদুয়ার জেলার ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ের মাদারিহাট ও হাসিমারার মাঝখানে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় একটি লেপার্ড ক্যাটের। ঘটনার পর স্থানীয়রা এসে ভিড় জমান সেখানে, খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে। কিন্তু জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ওই এলাকায় বনকর্মীরা পৌঁছানোর আগেই রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে যায় মৃত শাবকটির দেহ।

এরপর আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া এশিয়ান হাইওয়েতে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় একটি বুনো মাকনা হাতির। ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, লরিটির ধাক্কায় প্রকান্ড হাতিটি প্রায় পনেরো ফুট দূরে ছেঁচড়ে যায়। বন দপ্তরের জলদাপাড়া বনবিভাগের পক্ষ থেকে হাতিটিকে চিকিৎসা করার ও সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রাণে বাঁচানোর চেষ্টা চালানো হয় রাতভর। কিন্তু বন দপ্তরের শত চেষ্টা ব্যর্থ করে অবশেষে ১৫ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হাতিটির।

RELATED ARTICLES

Most Popular