নিজস্ব সংবাদদাতা: দিব্যি জলজ্যান্ত রয়েছেন মানুষটি কিন্তু মূখ্য মন্ত্রী তাঁরই আত্মার শান্তি কামনায় শোকবার্তা প্রকাশ করে ফেললেন! বুধবার বিকালে এরকমই অবাক করা কাণ্ডে হাসির খোরাক হল রাজ্য সরকার। ঘটনাটি ঘটেছে মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নিজেরই মন্ত্রী সভার সদস্য সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টু রাম পাখিরা কে ঘিরে।
মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী, মন্টুরাম পাখিরা। তাঁকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা করে জানা যায়; তিনি করোনা আক্রান্ত। এর পর তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েও দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা অথচ বুধবার বিকেলে নবান্নে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে মন্ত্রী মন্টুরামের মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়।
একেবারে সরকারি নিয়ম মেনেই মেমো নম্বর সহ সেই শোকবার্তায় মূখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “অগ্রণী রাজনীতিবিদ ও সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মন্টু রাম পাখিরার প্রয়ানে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৫৭বছর। মন্টুরাম পাখিরা শেষ দিন পর্যন্ত কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি প্রথম এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। ২০১২সালে মন্টুরাম পাখিরা মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন। রাজনীতির পাশাপাশি মন্টুরাম পাখিরা একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসাবে যথেষ্ট পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি মন্টুরাম পাখিরা পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
এই শোকবার্তা প্রকাশের পরেই শোকের ছায়া নেমে আসে রাজনৈতিক মহলে বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে। সারা রাজ্যেই তৃনমূল দলের একজন মন্ত্রী পর্যায়ের নেতা বলে কথা। তার ওপর করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু! ফলে একটা দুশ্চিন্তার বাতাবরণ তৈরি হয়। একজন মন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাও আবার মাত্র ৫৭ বছর বয়সে।
এদিকে মন্ত্রী তো দিব্যি বেঁচে রয়েছেন। কিছুক্ষণ পর দফতরের আধিকারিকরা জানতে পারেন বেঁচে রয়েছেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাহার করা হয় শোকবার্তা। পরে নিজেদের ভুলটা বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি সেই শোকবার্তা তুলেও নেয় তাঁরা।কিন্তু বুধবারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
প্রশাসনিক মহলেই একাংশের প্রশ্ন রাজ্য প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এক দপ্তর এমন বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি করল? যদিও বিষয়টি যে ভুলবশতই হয়েছে সেই শোকবার্তা সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলে তেমনই বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তবে তার আগেই; চরম লজ্জায় পরে যায় রাজ্য সরকার। কেউ কেউ অবশ্য মজা করে বলেছেন, খুবই দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তথ্য সংষ্কৃতি দপ্তর। বয়ান তৈরি করাই আছে খালি নাম বয়স সন তারিখ ইত্যাদি বসিয়ে দিলেই হল।