নিজস্ব সংবাদদাতা; আসানসোল: শুভেন্দু অধিকারী প্রায় বিদায় পর্বে আর তারমধ্যেই বেসুরো বাজছেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসকের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে এবার আরেক ফাঁড়া হয়ে এলেন এবার আসানসোল পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। রানিগঞ্জ গালর্স কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে শাসকদলেরই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এক চিঠিতে। বলেছেন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আসানসোলের জন্য কেন্দ্র সরকারের বরাদ্দ টাকা পাচ্ছেনা আসানসোল পুরনিগম।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠিতে জিতেন্দ্র অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্পে মনোনীত করেছিল আসানসোলকে। কিন্তু রাজ্য সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ২ হাজার কোটি টাকা নিতে পারেনি আসানসোল পুরসভা। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই ওই প্রকল্পের সুবিধা নিতে দেওয়া হয়নি আসানসোল পুরসভাকে।
তাঁর অভিযোগ, পুরমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তরফে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখা হয়নি।
জিতেন্দ্র আরও অভিযোগ করেছেন, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পেও কেন্দ্রের থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা আসানসোল পুরসভাকে নিতে দেওয়া হয়নি। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, পুরমন্ত্রী এবং পুরদপ্তর কেন্দ্রের ওই টাকা তাঁদের নিতে দেয়নি। পুরদপ্তরের একাধিক প্রকল্প জমা দেওয়া হলেও তার অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আসানসোলের পুর প্রশাসকের।
তিনি চিঠিতে আর্জি জানিয়েছেন, আসানসোল পুরসভাকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারির এই চিঠিকে খাটো চোখে দেখছেনা রাজনৈতিক মহল। গত লোকসভা নির্বাচনে এই আসনটি অনায়াসে বের করে এনেছেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। শুধু তাই নয় সম্প্রতি কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে সিবিআই (CBI)। মাফিয়াদের পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে প্রশাসক ও রাজনৈতিক নেতাদের বড়সড় যোগ সাজশের প্রমানও পাওয়া গেছে বলে সিবিআইয়ের (CBI) দাবি।
ইতিমধ্যেই কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবার নজর রাজনৈতিক নেতাদের দিকে। এরই মধ্যে জিতেন্দ্র তিওয়ারির ভূমিকা রীতিমত ইঙ্গিতবাহী বৈকি। নির্বাচন যত কাছে আসবে তত এই প্রবণতা স্পষ্ট হতে থাকবে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই কিন্তু বিজেপির যে হুঁশিয়ারি ছিল, ‘ডিসেম্বর মাস কাটিয়ে উঠুক তৃনমূল!’ তাই কি তবে ফুটে উঠতে শুরু করেছে? অনেকের মতে এই ফাটল অবশ্য বাড়তেই থাকবে।