নিজস্ব সংবাদদাতা: স্কুল কিংবা টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে কিশোরীর দিকে চেয়ে থাকত লোলুপ দু’টো চোখ। নারীর শরীর মাপা সেই চোখ বুঝতে পারে নারীই। তাই এড়িয়ে যেত ক্লাশ টেনে পড়া মেয়েটি। কিন্তু জানোয়ারের জেদ এতটাই চেপে গিয়েছিল যে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব অবধি দেওয়া হয়। কিন্তু আরও পড়তে চেয়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল কিশোরী। সোমবার তারই মূল্য চোকাতে হল কিশোরীকে। পরীক্ষার কাগজ জমা দিতে গিয়ে আর জ্যান্ত ফেরেনি কিশোরী। বিনিময়ে ফিরে এসেছে তার ধর্ষিতা দেহটি। মুর্শিদাবাদ সামসেরগঞ্জে ১৭বছরের কিশোরীর এই মর্মান্তিক পরিনতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন , মাঠপাড়া গ্রামের কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিত পাশের হিজলতলার যুবক বাপি শেখ। বিয়ে না করলে নানা হুমকি, কটূক্তি করত বাপি, এমনই অভিযোগ। কিন্তু মেয়েটির পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যরাও এই বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে চাননি। সে সামশেরগঞ্জের বাণীচাঁদ আগরওয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পড়াশোনা নিয়ে থাকতে চায়। আর তার এই অনমনীয় ভাব বাপির ক্রোধ বাড়িয়ে তুলছিল। মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে সে সম্প্রতি অশ্রাব্য গালিগালাজও করে। প্রতিহিংসার সুযোগ খুঁজছিল বাপি।
সেই সুযোগ এসে গেল সোমবার। এদিন দুপুরে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে স্কুল নিজের স্কুলে গিয়েছিল মেয়েটি। অভিযোগ, সেখান থেকে ফেরার পথেই তার পথ আটকে দাঁড়ায় বাপি ও তার বন্ধু। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ছাত্রীকে। অভিযোগ, তার গলা টিপে, কীটনাশক খাইয়ে রাত আটটা নাগাদ বাড়ির কাছের একটি রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। অবস্থার অবনতি ঘটায় প্রথম স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ছাত্রীকে। সেখান থেকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময়ে রাস্তাতেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে চিকিৎসকরা তার শারীরিক পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন যে , খুনের আগে গণধর্ষণ করা হয়েছিল ওই ছাত্রীকে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত বাপি শেখ ও তার বন্ধু। মেয়েকে হারানোর শোকের মাঝেও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব ছাত্রীর পরিবার।নৃশংস ঘটনার পরই গা ঢাকা দেওয়া অভিযুক্ত যুবক বাপি শেখ ও তার বন্ধুর খোঁজে তল্লাশিতে নেমেছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ।