অশ্লেষা চৌধুরী: দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের ক্ষমতা রাজের অবসান, কাঁথি তথা পূর্ব মেদিনীপুরের সমস্ত সরকারি ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হল অধিকারী পরিবারকে। নির্বাচিত পদগুলি ছাড়া আর কোনও সরকারি পদে রইলন অধিকারীদের। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্যদ থেকে শিশির অধিকারীকে সরিয়ে নতুন চেয়ারম্যান করা হল অধিকারী পরিবারের চির বৈরী অখিল গিরিকে। গোটা ঘটনায় শিশিরের মন্তব্য, ‘আমার কিছু জানা নেই, তাই প্রতিক্রিয়াও নেই।‘
তবে অখিল গিরি দাবী করেছেন, ‘শেষ কয়েক মাস ধরে শিশির বাবু কোনও বৈঠকে আসতেন না। ফলে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পরিষদের কোনও কাজ করছিলেন না তিনি৷ তাই এই পদক্ষেপ নিয়েছে তৃণমূল৷ এখানে কোনও পরিবারের ওপর ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই পদক্ষেপ নেয়নি তৃণমূল।’
শুভেন্দুর দল ত্যাগ করে পদ্ম শিবিরে যোগদানের পর থেকেই অধিকারী পরিবারে কোপ পড়ছে। এর আগে কাঁথি পরিষদ থেকে সৌমেন্দু অধিকারীকে সরানো হয়েছিল৷ আর এইবার সেই কোপ পড়ল শিশির বাবুর ওপর। এদিকে শিশিরকে সরিয়ে যে অখিল গিরিকে দায়িত্ব দেওয়া হল, তার সাথেও অধিকারী পরিবারের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। সুপ্রকাশ গিরি, অখিল গিরিরা শুভেন্দুর দলত্যাগ করার পরে অধিকারী পরিবারকে নিশানা করেছেন বারবার। আর পদে আসীন হয়েই আবার শিশির অধীকারীর নামে অভিযোগের ডালি খুলে বসেছেন তিনি। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পরিষদের কোনও কাজ করছিলেন না শিশির, বলেই এদিন অভিযোগ করেন অখিল বাবু।
তবে, কুণাল ঘোষ অবশ্য শিশিরের হয়ে ব্যাট ধরেছেন। তিনি দাবী করেছেন শিশির বাবু দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় কাজ করতে পারছেন না। তাঁর বয়সও হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সব জায়গায় বেরিয়ে কাজ করতে পারছেন না তিনি।
এর আগে সৌমেন্দু সম্পর্কে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন অখিল বাবু, তিনি গোপনে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন বলেও দাবী করেন তিনি। এরপরের অবশ্য দাদার পথ অনুসরন করে পদ্ম শিবিরে সৌমেন্দুর যোগদান। যদিও তার আগে কাঁথি পরিষদ থেকে সৌমেন্দুকে সরানো হয়েছিল। আর এবার ডিডিএস থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দলের বর্ষীয়ান শিশির অধিকারীকে৷
প্রসঙ্গত, খড়দহের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছিলেন রাম নবমীতে তাঁর পরিবারেও পদ্ম ফুটবে। সৌমেন্দুকে বিজেপিতে যোগদান করিয়ে তার শুভ সূচনা করে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তবে কী পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর শিশির বাবুও সেই পথেই পা বাড়াতে চলেছেন! এই নিয়ে ক্রমশই ঊর্ধ্বগামী জল্পনার পারদ। তার ওপর আজ আবার দুর্গাপুরে সভা রয়েছে শুভেন্দুর। সেই সভাতেও কী আগের ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটবে, আবার কী নিজের পরিবারে পদ্ম ফোটাতে যাচ্ছেন শুভেন্দু! বা সেখান থেকে তিনি কী বার্তা দিতে চলেছেন, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।