নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার, ছুটির দিনেও পথ দুর্ঘটনা আর মৃত্যুর স্বাক্ষী রইল বেলদা থানার বাসিন্দারা। আর আবারও সেই দুর্ঘটনার কেন্দ্রে রইল ৬০ নম্বর রানীগঞ্জ-বালেশ্বর জাতীয় সড়ক। এদিন সাত সকালেই মৃত্যু হয়েছে একজন বয়স্ক চিকিৎসাকর্মীর যিনি একজন চিকিৎসকের সহকারি হিসাবে কাজ করতেন। এবারের ঘটনাস্থল বেলদা থানার অন্তর্গত জাতীয় সড়কের সালাজপুর নামক স্থানে, বেলদা মফঃস্বল শহর থেকে প্রায় ১০কিলোমিটার দক্ষিনে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম দুলাল সাউ। বছর পনিষট্টির দুলাল সাউ একজন চিকিৎসকের কম্পাউন্ডার হিসাবে কাজ করতেন। সরকারি হাসপাতালের ওই চিকিৎসক একটি বেসরকারি চেম্বারে সহকারি ছিলেন তিনি। রবিবার সকালে জাতীয় সড়কের পূর্ব দিকে নিজের গ্রাম থেকে বেরিয়ে সাইকেলে চেপে রাস্তা পার হয়ে পশ্চিম দিকের বেলদা অভিমুখের লেন ধরতে যাচ্ছিলেন দুলাল সাউ। সেই সময় পূর্ব দিকের দাঁতন গামী লেন দিয়ে ছুটে আসা একটি প্রাইভেটকার সোজাসুজি ধাক্কা মারে তাঁকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ির গতিবেগ এতটাই বেশি ছিল যে সাইকেল থেকে প্রায় উড়ে গিয়ে কংক্রিটের রাস্তার ওপর আছড়ে পড়েন দুলাল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় এই যে গাড়ির ধাক্কায় দুলালকে ছিটকে পড়তে দেখার পরও ঘটনাস্থলে না দাঁড়িয়ে বা আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও চেষ্টা না করেই প্রাইভেটকারের চালক গাড়ির গতিবেগ বাড়িয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার খবর পেয়েই স্থানীয় মানুষ ছুটে আসেন। সাতসকালেই চোখের সামনে নিজের এলাকার বাসিন্দার এই অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। দুলালকে হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি শুরু হয় জাতীয় সড়ক অবরোধ। সাধারন মানুষের দাবি জনবহুল এলাকায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ রাস্তা পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করাতেই একের পর দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।
তাঁরা আরও দাবি করেন জাতীয় সড়কের আশে পাশে জনবসতি থাকা স্বত্ত্বেও জাতীয় সড়কে যান নিয়ন্ত্রণের কোনোও ব্যবস্থা নেই ফলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছুটছে গাড়ি গুলি। আর এর ফলেই এই ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই অবরোধ চলায় যানজট সৃষ্টি হয় জাতীয় সড়কে। দাঁড়িয়ে পড়ে একের পর এক গাড়ি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বেলদা থানার পুলিশ। অবরোধকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস মেলায় অবরোধ প্রত্যাহার হয়। এদিকে পুলিশি তৎপরতায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫কিলোমিটার দুরে দাঁতন থানার বামুনপুকুরের কাছে পাকড়াও করা হয় ঘাতক প্রাইভেটকার ও চালককে। মমৃতদেহ সংগ্ৰহ করার পর তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এলাকায় শোকের ছায়া।