নিজস্ব সংবাদদাতা: মহামারির মতই এবার যেন অতিমারি করোনা ছড়িয়ে পড়ছে খড়গপুরে। সোমবারের মতই ফের ভয়াবহ সংক্রমনের খবর এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে সোমবার খবর এসেছিল রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন সালুয়ার ইএফআর ফার্স্ট ব্যাটেলিয়ানের প্রশিক্ষন কেন্দ্রে। মঙ্গলবার নতুন করে আরও ৪০ জন প্রশিক্ষন রত জওয়ানের আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে।
এই আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এ অবধি ব্যারাকপুর থেকে আসা এই ৪৪০ জন জওয়ানের মধ্যে ৮৫ জন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও এখানেই বাহিনীর সংক্রমন থেমে থাকছে এমনটা ভাবার কারন নেই কারন ইতিমধ্যেই আরও শতাধিক প্রশিক্ষনরত জওয়ানের নমুনা ফল প্রকাশের জন্য বকেয়া পড়ে রয়েছে। আশঙ্কার কারন এই যে মঙ্গলবারের এই ফলাফল এসেছে শনিবার রবিবারের সংগৃহিত নমুনা থেকে যার মধ্যে ৮৩টি ফলাফল অমীমাংসিত ছিল। সোমবার ও মঙ্গলবারের সংগৃহিত নমুনার ফল এখনও বকেয়া রয়েছে। রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর যখন এই হাল তখন খড়গপুর শহরের প্রানকেন্দ্র রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সাউথ সাইডে অবস্থিত আরপিএফ বা রেল সুরক্ষা বাহিনীর ব্যারাক থেকে এসেছে আরেকটি দুঃসংবাদ।
মঙ্গলবার ফের নতুন করে রেল সুরক্ষাবাহিনীর ৭ জন জওয়ান করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই রেল সুরক্ষা বাহিনীর হাত ধরেই খড়গপুর শহরে প্রথম করোনা সংক্রমনের ঘটনা ঘটেছিল। দিল্লি ও রাজস্থান থেকে বাহিনীর জন্য অস্ত্র আনার সঙ্গে সঙ্গে করোনা এনেছিলেন জওয়ানরা। গত এপ্রিলে আক্রান্ত হওয়া ৯ জন রেল সুরক্ষাবাহিনীর জওয়ানের মধ্যে খড়গপুর ব্যারাকের ৬ জন জওয়ান ছিলেন। এপ্রিলের সেই ঘটনার পর মাঝের ২ মাস আর.পি.এফ ব্যারাকে সংক্রমনের নতুন কোনও ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু হঠাৎ করে গত কয়েকদিন একজন একজন করে মোট ৩ জন পজেটিভ এসেছিল। সোমবারও একজনের পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া গেছিল। মঙ্গলবার এক লাফে বাহিনীর ৭ জন আক্রান্ত হওয়ায় ফের দুশ্চিন্তায় রেল প্রশাসন।
মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাসপল্লী সংলগ্ন এলাকায় এক ১৬ বছরের কিশোরী আক্রান্ত হয়েছে। জানা গেছে এই কিশোরীর আত্মীয় কয়েকদিন আগেই আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি। ওই ব্যক্তির একাধিক সংসার রয়েছে যার মধ্যে একটি সংসারের মেয়ে ওই কিশোরী। সব মিলিয়ে এদিন খড়গপুরে মোট ৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, অর্ধশত থেকে মাত্র ২ কম!
এদিকে ভয়াবহ এই সংক্রমনের কারনে সালুয়ার অধিবাসীদের দাবি মেনেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের জওয়ানদের প্রশিক্ষন। আক্রান্ত জওয়ানদের হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি আক্রান্ত হননি এমন জওয়ানদের ব্যারাকপুর ব্যারাকে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে। সালুয়ায় আগামী ১৫ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে। বাজারের সমস্ত দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং অধিবাসীদের বাড়ির বাইরে না বেরুনোর জন্য বলেছে পুলিশ। সোমবার এবং মঙ্গলবার স্যানিটাইজ করা হয়েছে বাজার ও সংলগ্ন এলাকা। এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই ৪৮ জন ছাড়াও দাসপুর ১ ও দাসপুর ২ য়ে ৪ ও ৩ জন মিলিয়ে মোট ৫৫ জন নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।