ওয়েব ডেস্ক : শেষমেশ রক্ষকই হল ভক্ষক! কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলো সেখানকারই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা খোদ ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার দিগম্বরপুর গ্রামের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শুক্রবার সকালে গ্রামবাসীদের তরফে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। ভীন রাজ্য থেকে বহু মানুষ এ রাজ্যে ফিরছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বহু মহিলা। রাজ্যে ফেরার পর নিজ নিজ জেলার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে প্রত্যেককে রাখা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন পুলিশকর্মীরা৷ কিন্তু এই রক্ষকই যখন ভক্ষকের রূপ নেয়, তাদের লোভ লালসার শিকার হতে হয় মহিলাদের সেক্ষেত্রে সরকারী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে আদেও মহিলাদের নিরাপত্তা আছে কিনা বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর সেই প্রশ্নই বারংবার ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার দিগম্বরপুর গ্রামে ‘কর্মতীর্থ’ নামে একটি বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। মূলতঃ ইন্দ্রনারায়ণপুর, দিগম্বরপুর ও পশ্চিম শ্রীধরপুর-এই তিনটি গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক ও করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ওই সেন্টারে ১৪ দিনের জন্য রাখা হচ্ছে। এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ভিলেজ পুলিশ জাহির আব্বাসকে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক মহিলার সঙ্গে ওই ব্যক্তি অভব্য আচরণ করে এমনকি জোড় করে তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার সময় ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন এলাকারই ২ যুবক। মহিলাটির চিৎকার কানে আসতেই তারা ঘটনাটি জানার চেষ্টা করে৷ এরপর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পাঁচিলে উঠে পড়ে। এরপর ঘটনাটি তাদের নজরে পড়তেই প্রমাণ স্বরূপ মোবাইলে ভিডিও তুলে রাখে ওই দুই যুবক।
রাতেই ঘটনার কথা গ্রামবাসীকে জানায় ওই দুই যুবক। এরপর গ্রামবাসীদের তরফে রাতেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকাল থেকেই এলাকাবাসীর তরফে গোটা এলাকা জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও হাতের বাইরে চলে যায়। পুলিশকে দেখে শুরু হয় ইঁট বৃষ্টি। অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে সরব হন স্থানীয়রা। এরপর পুলিশের তরফে নির্যাতিতা মহিলা ও অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত জাহির আব্বাসকে পুলুশের হাত থেকে টেনে নিয়ে মারধর শুরু করে। এরপর পুলিশের তরফে চলে লাঠিচার্জ। এরপর ওই মহিলা ও অভিযুক্ত পুলিশকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনায় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই প্রথম নয়, এর আগেও গ্রামের বহু মহিলাকে এভাবেই যৌন নির্যাতন করেছেন অভিযুক্ত জাহির আব্বাস। এমনকি ঘটনা জানাজানি হলে তাদের খুনের হুমকিও দিয়েছে অভিযুক্ত। এবিষয়ে সুন্দরবন জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, এদিনের ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।