নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের বলপাই গ্রামপঞ্চায়েতের অফিসে চারদিনের তৃনমূল কর্মীর গৌরহরি বেরার নেতৃত্বে হামলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল। দায়ের করলেন প্রতিমা প্রামানিক। বুধবার গৌরহরি বেরার নেতৃত্বে নজির বিহীন হামলা চলে। অফিস থেকে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পঞ্চায়েত সচিবকে। বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। প্রধাননের অভিযোগ তাঁর কাপড় ধরে টানাটানি হয়। সম্মান রাখতে বাথরুমে ঢুকে যান তিনি কিন্তু গৌর সেই বাথরুমের দরজাতেও লাথি মেরে দরজা ভাঙার চেষ্টা করে, সঙ্গে কুৎসিত গালাগালি। বাথরুমের ভেতর থেকেই মোবাইলে সবং ওসিকে ফোন করেন প্রধান। পুলিশ এসে সে যাত্রায় রক্ষা করে।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার প্রধান, প্রহৃত উপপ্রধান পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে অবস্থানে বসেন অনির্দিষ্টকালের জন্য। দোষীদের গ্রেফতার না করলে পঞ্চায়েত অফিস খুলবেনা জানিয়ে দেওয়া হয়। টনক নড়ে মহকুমা, জেলা প্রশাসনের। প্রতিমা প্রামানিকের কথা অনুযায়ী, ”বিডিও সাহেব আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন, বলেছিলেন বিষয়টাকে নাকি উনি মিটিয়ে দেবেন অভিযুক্তদের সঙ্গে বসিয়ে। আমি যাইনি। আমার সম্মান নিয়ে টানাটানিটা মিটিয়ে নেওয়ার নয়। এটা ক্রিমিনাল কেস আমি আইনের কাছেই বিচার চেয়েছি, এফআইআর করেছি। কাজ না হলে দিদির কাছে জানাবো।”
বিডিওর বোঝাপড়া ব্যর্থ হওয়ার পরই সম্ভবত সবং পুলিশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওসি সবং নিজে প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রধানকে অনুরোধ করেন পঞ্চায়েত অফিসের কাজ স্বাভাবিক করার জন্য। কথা দিয়েছেন, দোষিদের গ্রেফতার করা হবে। অবশ্য বিষয়টা কেবল সবং পুলিশের নয়। জানা গেছে জেলা পুলিশেরও সবুজ সংকেত মিলেছে গৌর সহ বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে আর তারপরই সবং পুলিশ আশ্বাস দিতে পেরেছেন প্রধানকে।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূলের উঁচু তলার নির্দেশ রয়েছে এলাকার বিধায়ক, সভাপতি, প্রধান সহ অন্যান্য জন প্রতিনিধিদের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ খবরাখবর যেন পুলিশ রাখে। পিকের টিমের পাশাপাশি পুলিশও কাজটা করছে। পাশাপাশি সরকারের নির্দেশে অপরাধ, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি কঠোর ভাবে দমন করবে কারন নির্বাচনের সামনে কোনও বেআদপি সহ্য করতে রাজি নয় রাজ্য সরকার আর তৃনমূল সুপ্রিমো। আর তাই সবুজ সংকেত মিলতে দেরি হয়নি গৌরদের ধরার ব্যাপারে। তাই প্রধানকে আস্বস্ত করতে কালক্ষেপন করতে হয়নি। এ যাত্রায় গৌর ও তাঁর সঙ্গীদের বাঁচা মুশকিল আছে।
প্রতিমা এদিন এও দাবি করেছেন, এই ঘটনার পরিকল্পক রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভূঁইয়া ও তাঁর দলবল। প্রতিমার কথায়, ” মাত্র বছর কয়েক হলেন তৃনমূল হয়েছেন উনি এবং ওনার দলবল। আর উনি তৃণমূলে আসার পরই বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের কাজ করে বেড়াচ্ছেন। হয় ওঁর অনুগত হতে হবে নয় ঝামেলা। কংগ্রেসে থাকতেও তাই করেছেন। আমার বিরুদ্ধে লাগাতার ষড়যন্ত্র করেই চলেছেন। সঙ্গে প্রশাসনের একটা অংশকে পাচ্ছেন। সব প্রমান সহ তুলে দেওয়া হবে সরকার ও দিদির কাছে।”