ওয়েব ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে স্বস্তি দিতে সিবিএসই-র তরফে বুধবারই নবম-দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের সিলেবাস কম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী কমানোও হয়। কিন্তু রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দেওয়ায় সর্বপ্রথম ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে বিষয়ে অবশ্য আগেই সাফাই দিয়েছিল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন। কিন্তু তাতেও বিতর্ক না থামায় এবার নবম-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাস বাদ দেওয়ার বিতর্কে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেই মুখ খুললেন খোদ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ ও উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল। তিনি বলেন, কিছু লোক বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছেন। একেই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত চরমে। তার ওপর সিবিএসই-র সিলেবাস কমানো নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে যেভাবে রাজনীতির রঙ লাগছে তাতে ফের যদি সিলেবাস নিয়ে অন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ চিন্তায় পড়ুয়ারা।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানবসম্পদ ও উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নাম না করে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে একটি টুইটবার্তায় বলেন, “সিবিএসই সিলেবাস থেকে কয়েকটি বিষয় বাদ দেওয়া নিয়ে না জেনেই অনেক মন্তব্য করা হচ্ছে। সেই মন্তব্যের সমস্যাটা হল, একটি মিথ্যা ছবি তুলে ধরার জন্য কয়েকটি বিষয় বেছে নিয়ে রং চড়ানো হচ্ছে। কোনো বিষয় নিয়ে ‘সাজানো ব্যাখ্যা’ তৈরি করা সহজ হলেও সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই সিলেবাস কমানো হয়েছে। তাই আমাদের আন্তরিক আবেদন, শিক্ষা হল বাচ্চাদের প্রতি আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। শিক্ষা থেকে রাজনীতি দূরে সরিয়ে দেওয়া হোক এবং রাজনীতিকে আরও শিক্ষিত করে তোলা হোক।”
করোনা পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের চাপ মুক্ত করতে গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রের তরফে সিবিএসই-র নবম-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সর্বাধিক ৩০ % সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইমতো বুধবার কয়েকটি বিষয় বাদ দিয়ে নয়া পাঠ্যক্রমের ঘোষণা করে সিবিএসই। কিন্তু সংশোধিত সিলেবাসে দেখা যায় একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, নাগরিকত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি একেবারেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যক্রম থেকে ভারতে সামাজিক এবং নয়া সামাজিক আন্দোলন, পরিকল্পনা কমিশন ও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা এবং পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয় সমস্ত বিষয়ই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে বুধবার মুখ খোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই নড়েচড়ে বসে দেশবাসী৷ বিভিন্ন মহল থেকে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু হয়।
এ নিয়ে অবশ্য বুধবারই সিবিএসই-র তরফে বিষয়টি নিয়ে সাফাই দেওয়া হয় কিন্তু তবুও বিতর্ক থামেনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেই বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে টুইট করেন, তিনি বলেন, “সিবিএসই আগেই জানিয়েছে, স্কুলগুলিকে এনসিআরটির বিকল্প ক্যালেন্ডার মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং যে বিষয়গুলি বলা হয়েছে, তা করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পরীক্ষার জন্য একবারই করা হয়েছে। সিলেবাস ৩০% হ্রাস করে পড়ুয়াদের চাপ কমানোই একমাত্র লক্ষ্য।”