নিজস্ব সংবাদদাতা: নজির বিহীন গুন্ডামির স্বাক্ষী রইল সবংয়ের বলপাই গ্রামপঞ্চায়েত কার্যালয় যেখানে বিক্ষোভ দেখানোর নাম করে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হল পঞ্চায়েতের সচিবকে, মারধর করা হল উপপ্ৰধানকে আর অশ্রাব্য গালিগালাজ আর হেনস্থায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান। আর গোটা ঘটনার নেতৃত্ব দিল সদ্য বিজেপি থেকে তৃনমূলে যোগ দেওয়া বা বলা যেতে পারে রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভূঁইয়ার তৃনমূলে যোগ দেওয়া গৌর বেরা।
গত রবিবার সবংয়ের সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত সবংয়ের তৃনমূল ব্লক সভাপতি অমল পন্ডার হাত ধরে তৃনমূলিকরন সম্পন্ন হয়েছিল একদা কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া গৌর বেরার। আর তার তিনদিনের মাথায় কড়ায় গন্ডায় গুরুদক্ষিনা দিলেন গৌর। নিশ্চিতভাবেই এই গুরুদক্ষিনা অত্যন্ত জব্বর কারন যে পঞ্চায়েত এই হামলা চালানো হয়েছিল সেই পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা প্রামানিক যিনি বর্তমানে সবং হাসপাতালে ভর্তি তিনি মানস ভূঁইয়ার বিরোধী গোষ্টি বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধক্ষ্য অমূল্য মাইতির বোন।
বলপাই গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা প্রামানিক জানিয়েছেন, “বুধবার ২টা নাগাদ গৌর বেরার নেতৃত্বে কয়েকজন হঠাৎই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে পড়ে। আমরা তখন অফিসে কাজ করছিলাম। ওরা কুৎসিত ভাষায় গালাগালি করতে করতে ঢুকে পড়ে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রেশনের কুপনের তালিকা চায়। কিন্তু ওটা নেহাৎই অজুহাত ছিল। কারন আমরা কথা বলতে চাইলে কোনও কথা না শুনেই সচিব শঙ্কর শিট কে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে বাইরে চলে যায় এবং কিল ঘুঁষি মারতে থাকে। একই ভাবে মারধর করা হয় উপপ্রধান স্বপন মান্নাকে। আমার সামনে এসে কুৎসিত ভাষায় অঙ্গভঙ্গি, আকার ইঙ্গিত ও অকথ্য ভাষা প্রয়োগ করা হয়। বেপরওয়া তান্ডব চালানো হয়।”
অভিযোগ এই তান্ডব চালানোর সময় পঞ্চায়েত অফিসের সংযোগকারি বিদ্যুতের জাম্পার ফেলে দেওয়া হয় যাতে অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ না করে। কিন্তু সেটা করতে একটু দেরি হয়ে যায় ফলে হামলার বেশকিছু দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায়। আর সেই দৃশ্যই প্রমান করে দেয় কিভাবে অভিযুক্তরা পঞ্চায়েত অফিসে হামলা চালিয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিষয়টি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে প্রধান জানিয়েছেন। দ্য খড়গপুর পোস্টের হাতে সেই হামলার দুটি ফুটেজ এসেছে যাতে একজনকে কয়েকজন মিলে অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং অফিসের বাইরে ওই একই ব্যক্তিকে টানা হ্যাঁচড়া করার দৃশ্য দেখা গিয়েছে।
যদিও এর সত্যতা দ্য খড়গপুর পোস্ট যাচাই করেনি। বিষয়টি নিয়ে সচিবকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জানা গেছে তাঁর প্রেসার অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় তিনি ফোন ধরেননি। তৃনমূলের ব্লক সভাপতি অমল পন্ডাও ফোন ধরেননি। জেলার মধ্যে সর্বাধিক গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের রমরমা এই সবংয়েই। ১৯৯৮সাল থেকে তৃনমূল করে আসা অমূল্য মাইতি বনাম হালে তৃনমূলে যোগ দেওয়া মানস ভূঁইয়ার গোষ্টির মধ্যে প্রায় দিনই কোনও না কোনও ইস্যুতে ঝামেলা লেগেই থাকে। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।