ওয়েব ডেস্ক : করোনায় আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে স্বামীর, মৃত্যু সংবাদ শোনার পর সহ্য করতে পারেনি স্ত্রী। একদিকে স্বামীকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে সোমবার পর্যন্ত শুধুমাত্র শিলিগুড়িতেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের আক্রান্ত প্রায় ৫০০৷ তার ওপর করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর পাড়া প্রতিবেশীদের কুসংস্কার টিপ্পনি-র ভয়ে স্বাভাবিক জীবন নষ্ট হতে পারে ভেবে আতঙ্ক গ্রাস করেছে স্ত্রীর মনে। অবশেষে স্বামীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ২ মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেন স্ত্রী। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়িতে।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ১:৩০ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিক্ষকের। এরপর এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করে মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ প্রশাসনের তরফে ওই শিক্ষকের বাড়ির সামনে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। সেই সময়ই সকলের নজর এড়িয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছে যান তাঁর স্ত্রী। সেই সময় তিন নম্বর প্লাটফর্মে একটি ট্রেন ঢুকতে দেখে আচমকা দুই মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের সামনেই ঝাঁপ দেন ওই মহিলা। কিন্তু যেহেতু ট্রেনটি স্টেশনে ঢুকছিলেন ফলে স্বাভাবিকভাবেই ট্রেনের গতি থাকায় জোরে ব্রেক কষেন চালক। এর জেরে প্রাণে বেঁচে যান মহিলা ও তার দুই মেয়ে। তবে প্রাণে বাঁচলেও মহিলার ৫ বছর বয়সী মেয়ের একটি হাত বাদ গিয়েছে। একটি হাত ও একটি পা বাদ গিয়েছে দুবছর বয়সী আরেক মেয়ের। মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন মহিলাও।
শিক্ষকের স্কুলের প্রধান শিক্ষক অম্বুজ কুমার রায় জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই জ্বর সহ একাধিক করোনা উপসর্গে ভুগছিলেন তিনি। এরপর শুক্রবার ওই শিক্ষকের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। সোমবার তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু তিনি যেই হাসপাতালে ভরতি ছিলেন সেটি করোনা হাসপাতাল নয়। এদিকে তার অবস্থা আচমকা এতটাই আশঙ্কাজনক হয়ে যায় যে তড়িঘড়ি তাকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে চিকিৎসকরা জানান তাঁকে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা সম্ভব নয়। এরপর সোমবার রাত ১.৩৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের তরফে প্রথম খবরটা তার স্ত্রীকেই দেওয়া হয়। তারপর মঙ্গলবার সকালেই তিনি দুই মেয়েকে সিদ্ধান্ত নেন।