নিজস্ব সংবাদদাতা; ঝাড়গ্রাম : দৈনিক দেড়শ থেকে দু’শো টাকা, তায় নেই কোনো ছুটি। শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কারনে কাজে যোগ দিতে না পারলে সেদিনের মজুরি নেই। এমন কি করোনার মত পরিস্থিতিতে যেখানে বাকি সব অফিস কাচারি বন্ধ সেখানে দিন রাত এক করে কাজ করতে হয়েছে তাঁদের। গোটা ঝাড়গ্রাম শহরকে আবর্জনামুক্ত রাখার দায়িত্বে থাকা পৌরসভার সেই অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা মঙ্গলবার বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করলেন মঙ্গলবার।
এদিন সকালে তাঁরা দাবি করেন, বারংবার পৌর কর্তৃপক্ষকে মজুরি বৃদ্ধির কথা বললেও তাতে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। করোনার কালীন অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত শহরকে পরিষ্কার রাখলেও তাঁদের প্রতি কোনো সমবেদনা নেই পৌর প্রশাসনের। ফলে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। হঠাৎ করেই এই কাজ বন্ধ করার ফলে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় এদিন ময়লা আবর্জনা জমতে থাকে।
জানা গেছে ঝাড়গ্রাম পৌরসভার অন্তর্গত মোট ১৮ জন অস্থায়ী সাফাই কর্মী রয়েছে । তাঁরা শহরের বিভিন্ন প্রান্তের গৃহস্থের ব্যবহৃত নোংরা আবর্জনা ভ্যাট থেকে তুলে পৌরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে । এছাড়াও শহরের কোথাও কুকুর , বিড়াল মরে পড়ে থাকলে তাও পরিষ্কার করতে হয় তাঁদের । এসবের পাশাপাশি নালা নর্দমা পয়:প্রনালী ইত্যাদি পরিষ্কার করার দায়িত্বেও রয়েছেন তাঁরা। কর্মীদের দাবি এই সব কাজের বিনিময়ে ৪হাজার থেকে ৫২০০ টাকা বেতন দেওয়া হয় ।
পৌরসভার এক অস্থায়ী সাফাই কর্মী পরান মুখী দাবি করেন ইতিপূর্বে ১৮ই জুন এবং ৩০শে জুন দুটি পর্যায়ে তাঁরা বেতন বৃদ্ধি এবং তাদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পিএফ জমা নেওয়ার আবেদন করেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে এবং প্রতিমাসে নির্দিষ্ট হারে পিএফে টাকা জমা নিতে হবে। এছাড়া তাঁদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রকল্পের আওতায় সুবিধা প্রদান করতে হবে। কিন্তু সেই নিয়ে আজ অবধি কোনোও উচ্চবাচ্য করেনি প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি ছাড়া অন্য উপায় ছিলনা তাঁদের।
ঝাড়গ্রাম পৌরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক তুষারকান্তি সৎপতি বলেন , ” দেখুন পুরো বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ। এদের এই সমস্যাগুলো নিয়ে পৌরসভার পৌর প্রশাসন রয়েছে এবং মেম্বার বোর্ড রয়েছে সকলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আপাতত ওনাদের অনুরোধ করছি কাজ চালিয়ে যেতে।”