ওয়েব ডেস্ক: আনলক ১ শুরুর পর থেকেই রাজ্য সরকারের নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ধারাবাহিকের শুটিং। রাজ্য সরকারের তরফে শিল্পী ও টেকনিশিয়ান সহ মোট ৩৫ জনকে নিয়ে ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেও ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র নিয়ে নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অবশেষে সমস্যা সমাধানে হস্তক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবায় টলিউড ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক, শিল্পী, টেকনিশিয়ান প্রত্যেকেই।
এদিনের বৈঠকে আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি শংকর চক্রবর্তী জানান, সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই গত মাস থেকে শুটিং শুরু হয়েছে৷ প্রতিদিনই বারংবার ফ্লোর ও পোশাক জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। তবে বিধি নিষেধ মানা সত্ত্বেও বিভিন্ন দু’এক জায়গা থেকে নানারকম অভিযোগ আসছে৷ কখনো মেকআপ রুমে বেশি লোক থাকার অভিযোগ, কখনো ফ্লোরে স্বাস্থ্যবিধি না মানা। সেগুলি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এদিনের বৈঠকে অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল শিল্পীদের পারিশ্রমিক। আর্টিস্ট ফোরামের আর এক সদস্য জানান, ফোরামে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি আর্টিস্ট রেজিস্টার্ড রয়েছেন। তার মধ্যে সবাই যে কাজ পাচ্ছেন তা কিন্তু নয়। তার ওপর করোনা পরিস্থিতিতে কম সংখ্যক লোক নিয়ে কাজ করায়। অনেক চরিত্র বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে অনেক ছোটো শিল্পীই কাজ হারিয়েছেন। ফলে অনেকের কাছেই টাকাটা বড়ো সমস্যাম তার উপর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কম টাকায় কাজ করার জন্য রীতিমতো চাপ দিচ্ছেন শিল্পীদের।
সাধারণত যারা ছোট চরিত্র কাজ করেন অথবা যাদের ৩-৪ দিনের চরিত্র থাকে তাদের এমনিতেই পারিশ্রমিক কম দেওয়া হয়। তার ওপর প্রতিদিন যে তারা কাজ পাবেন সেদিকেও নিশ্চয়তা নেই। প্রত্যেকটি ধারাবাহিকেই এমন ৫ -৬ জন চরিত্র থাকেন থাকেন যাদের মুখ প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায়। ফলে তারা বেশি টাকা পান। বাকি যাদের মাঝে মাঝে দেখা যায় স্বাভাবিকভাবেই তারা ৩-৪ দিনের শিল্পী। ফলে ধারাবাহিক কর্তৃপক্ষ চাইলেই পারিশ্রমিক কমাতে পারেন। কিন্তু তা না করে করোনার অজুহাত দিয়ে শিল্পীদের পারিশ্রমিক কমানো একেবারেই অযৌক্তিক।
চ্যানেল কর্তৃপক্ষকেও বুঝতে হবে যে দীর্ঘ ৩ মাস লকডাউনে অন্যান্যদের মতো টেলিভিশনের শিল্পীরাও বসেই ছিলেন। সরকারি কিংবা বেসরকারি কর্মীদের মতো বাড়িতে বসে তারা পারিশ্রমিক পাননি। ফলে দীর্ঘ ৩ মাসের ওপর বাড়িতে বসে থাকের পর ধীরে ধীরে শিল্পীদের পারিশ্রমিক কমানোর বা টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক বলেই মনে করছেন আর্টিস্ট ফোরাম। এর বিষয়গুলি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনতে এদিন বৈঠকে বারংবার শিল্পীদের পারিশ্রমিকের বিষয়টি নজরে রাখার আবেদন জানায় আর্টিস্ট ফোরাম।