নিজস্ব সংবাদদাতা: যাওয়ার কথা ছিল ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দক্ষিন দিকে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর কিন্তু লরি ছুটছিল ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে খড়গপুর শহরের ঝাড়গ্রামের দিকে! এরপর খড়গপুর চৌরঙ্গী থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে জাতীয় সড়কের নিচ দিয়ে যাওয়া খড়গপুর আদ্রা শাখার রেললাইনের ওপরে সেতুর গার্ড ওয়াল ভেঙে নিচে পড়ে যায় লরিটি।
খড়গপুর মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ঠিক নীচে গোকুলপুর স্টেশনের কয়েক কিলোমিটার আগের এই ঘটনায় অন্ততঃ ৪ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও রেলের ইঞ্জিনিয়াররা এসে দেড় ঘন্টার চেষ্টায় গ্যাস কাটার দিয়ে লরির সামনের অংশ কেটে চালক সুরজ সিং কে উদ্ধার করে। খালাসি সমর সিং কে অবশ্য আগেই বেরিয়ে গেছিলেন স্থানীয় মানুষ জনের চেষ্টায়। দু’জনকেই মেদিনীপুর মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা আপাতত বিপদমুক্ত বলেই জানা গেছে।
ঘটনায় রেললাইনের ওপরে থাকা ২৫হাজার ভোল্টের তার ছিঁড়ে যায়। ফলে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন চালক ও খালাসি। খবর যায় খড়্গপুর লোকাল থানার মধ্যেই ঘটনাস্থলের সামনে সাদাদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে। রেল পুলিশ সহ রেলের কর্মীরা দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে আসেন। গ্যাসকাটার দিয়ে লরির সামনের অংশ কেটে চালক সুরজ সিং কে উদ্ধার করতে সময় লেগে যায় প্রায় দুই ঘন্টা।
পুলিশ জানিয়েছে লরিটি মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটি থেকে এফ সি আই গোডাউন থেকে রেশনের গম ভর্তি করে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর যাচ্ছিল। প্রশ্ন হল
তাহলে রুট পরিবর্তন করে খড়্গপুর চৌরঙ্গী থেকে পশ্চিমে জাতীয় সড়ক ধরে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার কারন কি। সন্দেহের কারন এই কারনেই যে করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার জনগনকে যে ঢালাও রেশন সরবরাহ করা শুরু করেছেন গত কয়েকমাস ধরে সেই পর্বে বিভিন্ন জায়গায় রেশন পন্য পাচার হচ্ছে। এমনকি খড়গপুর পুলিশও কয়েকমাস আগে খড়গপুরের জিন শহরে বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া গম উদ্ধার করেছিল। এক্ষেত্রেও উল্টে যাওয়া গাড়িতে গম ছিল এবং ঝাড়গ্রামের যে পথে লরিটি রওনা দিয়েছিল সেই পথেই খড়গপুরের মালঞ্চ ও ঝাড়গ্রামের অংশে একাধিক আটাকল রয়েছে।
লরির খালাসীর বক্তব্য, মেদিনীপুরে মাল বোঝাই করে আসার পর চালক অনুভব করেন যে লরিটি সমস্যা করছে তাই লরি নিয়ে চালক নিমপুরার দিকে যাচ্ছিল যেখানে গ্যারেজ রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল চৌরঙ্গী থেকে পূর্ব দিকে রামনগর যাওয়ার রাস্তার ওপরেই চৌরঙ্গী ও রূপনারায়নপুরে ১ থেকে ৩কিলোমিটারের মধ্যেই যেখানে অজস্র গ্যারেজ রয়েছে সেখানে ১০কিলোমিটার দুরে নিমপুরা যাচ্ছিল কেন গাড়িটি। অন্যদিকে ঘটনাস্থলের কাছেই রশ্মি মেটালিক কারখানা। সেই কারখানার প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকদের বক্তব্য লরিটি বেশ ভাল গতিতেই ছুটছিল যেন মনে হচ্ছিল পেছনে কোনও পুলিশ গাড়ি তাড়া করেছে। এরপর নিয়ন্ত্রন রাখতে না পেরেই গাড়িটি উল্টে যায়। প্রশ্ন হল খারাপ গাড়ি এত জোরে ছুটছিল কেন? ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।