ওয়েব ডেস্ক: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে সম্পূর্ণ করোনা হাসপাতাল ঘোষণা করার পর থেকেই বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। গত দু’দিন আগেই হাসপাতালের ভিতর বেডের জন্য দালালদের তোলাবাজির ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই ফের আরও এক বিতর্কের দানা বাঁধলো মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর পর চুরি হচ্ছে মৃত দেহের কাছে থাকা একের জিনিসপত্র। করোনায় মৃত এক রোগীর মোবাইল চুরির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের বিরুদ্ধে। খবরটি পাওয়া মাত্রই নড়েচড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় মৃতের পরিবারের সুপারের অফিস এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দা বছর ২৩ এর তরুণীমূলতঃ কিডনির সমস্যা নিয়ে নাগেরবাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। সেখানে তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। এরপর তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই তাঁকে নাগেরবাজারের হাসপাতাল থেকে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু এই মূহুর্তে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালেও শুধুমাত্র করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। সময় নষ্ট না করে তড়িঘড়ি তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সপ্তাহ খানেক তাকে ভরতি থাকতে হয়। অবশেষে ১৮ মে মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। এদিকে মৃত্যুর পর ওই তরুনীর সাথে থাকা দুটি ফোন হাসপাতাল থেকেই চুরি হয়ে যায়।
মেয়ের মৃত্যুর মাস খানেক পর মেয়ের ব্যবহৃত ফোন ফেরত পান তরুণীর বাবা। কিন্তু এক্ষেত্রে দুটি ফোনের বদলে একটি ফোন ফেরত পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরেকটি ফোনের কথা জানালে তারা অস্বীকার করে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সুপার ও পুলিশের কাছে মৃত মেয়ের জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ করেন।
তরুণীর বাবা জানান, “.মেয়েকে তো হারিয়েছি। কিন্তু মানুষ যে এত নির্মম ও লোভী হতে পারে তা ভেবে মনুষ্যত্বের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। কী ভাবে কেউ মৃত ব্যক্তির সরঞ্জাম চুরি করতে পারেন? এরা কি মানুষ?”
সম্প্রতিকালে বারংবার শিরোনামে আসছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের নাম। গত দুদিন আগে এই হাসপাতালেই সিসিইউ বেড পাওয়া নিয়ে দালাল চক্রের ঘটনা নজর কেড়েছে সকলের। এই ঘটনার একদিনের মাথায় ফের মঙ্গলবারের ফোন চুরির ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে।