নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘করোনাকে পাশ বালিশ করে ঘুমান’ কথাটা বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। কথাটাকে মজার ছলেই নিয়েছেন অনেকে, কেউ কেউ আবার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন পাশ বালিশকে করোনা সাজিয়ে রাস্তায় শুয়ে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার মধ্যে অত্যুক্তি কিছুই ছিলনা আর বিষয়টা তাঁর নিজস্ব গবেষনা লব্ধ বিষয়ও নয়। মুখ্যমন্ত্রী হু’র কথাই নিজের ভাষায় সহজ করে বলেছিলেন। সম্প্রতি হু বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনটাই জানিয়েছে যে উপসর্গ হীন করোনা রোগীরা ঘরেই থাকতে পারবেন।
অর্থাৎ যাঁদের সর্দি কাশি জ্বর শ্বাসকষ্ট নেই তাঁরা করোনা পজিটিভ হলেও যেহেতু তাঁদের উপসর্গ নেই তাঁরা ঘরে বা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারেন, তাঁরা অতটা মারাত্মক নন। হয়ত এই তত্ত্বের ওপর দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী আরও একবার বলেছিলেন, সব করোনা রোগীদের হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই, তারা বাড়িতেই থাকবেন। এক্ষেত্রেও সমালোচনা, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ হয়েছে। মঙ্গলবার এই তত্ত্ব কার্যত ঘোরতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেছে। কারন এদিন করোনাকে পাশ বালিশ করেই বাড়িতে থেকে মৃত্যু হয়েছে মুম্বাইয়ের এক ডেপুটি পুর কমিশনারের। সম্পূর্ণ উপসর্গ হীন ওই কমিশনার বাড়িতে থেকেই করোনা মুক্ত হবেন বলে আশা করেছিলেন।
সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে সোমবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। মাত্র ২৪ঘন্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে বৃহৎ মুম্বাই পুরনিগমের ডেপুটি পুর কমিশনার পদমর্যাদার এক আধিকারিকের। আপাতত তাঁর দেহ সিওন হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেখানেই অটোপসি হবে।
জানা গেছে মাত্র বছর পঞ্চান্নর ওই আধিকারিকের উপসর্গ ছিল না এবং করোনা পজিটিভ আসার পর পুরনিগমের ওয়ার্ডস্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর আমরা ওঁনার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। উনি বললেন যে বাড়িতে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, কারণ অ্যাটাচড বাথরুম-সহ তাঁর আলাদা ঘর রয়েছে। তাঁর করোনা উপসর্গ ছিল না।’
তারপর মধ্য মুম্বইয়ের দাদারে নিজের বাড়িতেই মারা যান ওই আধিকারিক। পুরনিগম জানিয়েছে, সোমবার রাতে খুব সম্ভবত ওই আধিকারিকের হার্ট অ্যাটাক হয়। মঙ্গলবার পরিবাবের তরফে পুরনিগমের ওয়ার্ড অফিসে ফোন করে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
এখনও অবধি হু এই বিষয়ে কী বলেছে জানা যায়নি তবে চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, যদি কোনও ব্যক্তির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে এবং তিনি যদি পঞ্চাশোর্ধ হন তবে তা বিপদজনক হিসাবেই ধরে নেওয়া উচিৎ এবং হাসপাতালেই রাখা শ্রেয় কারন তাতে কারও অন্যকোনও কারনে সঙ্কট এলে তাতে চিকিৎসার সুযোগ থাকবে। উপসর্গ হীন করোনার মতই কারও হার্টের অবস্থা উপসর্গ হীন হতে পারে। হয়ত সেটাই তার প্রথম আ্যটাক যা করোনার কারনেই তরান্বিত হয়েছে। সুতরাং করোনাকে পাশ বালিশ না করাটাই শ্রেয়।