নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের যদুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক যুবককে সাপে কামড়ের ঘটনার পরও খুব একটা নড়চড় হয়নি। পরের ঘটনা পূর্ব বর্ধমানে। সেখানেও সাপের উপদ্রবে সারারাত জেগে কাটিয়ে ছিলেন শ্রমিকরা সাপের আতঙ্কে আর শনিবার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই সাপের কামড়ে মৃত্যুই হল এক পরিযায়ী শ্রমিকের।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থানার পাগলীগঞ্জ এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম দিলীপ পন্ডিত (৬০)।
কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বলতে জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্স। সেখানেই রাতে ঘুমের মধ্যে সাপের ছোবলে মৃত্যু হল ভিনরাজ্য ফেরত শ্রমিকের। শনিবার রাতে বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জে জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্সে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় একদিকে আতঙ্ক অন্যদিকে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। মানুষের দাবি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবৈজ্ঞানিক ভাবে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে মানুষকে। তারই প্রমান নিজের জীবন দিয়ে রেখে গেলেন পন্ডিত।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে ফিরে আসেন দিলীপ পন্ডিত। সেখানে তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। পাগলীগঞ্জের দিলীপ পন্ডিতের সঙ্গে একই সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রাম পোল্লা পাড়ার সুভাস মালি নামে আরও এক শ্রমিক ফিরে আসেন। জেলায় ফিরে আসার পর দুজনেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। লালার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। চিকিৎসকেরা তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দেন।
কিন্তু এরপর এলাকার লোকেরা তাদের গ্রামে ঢুকতে আপত্তি জানানোয়, ওই দুই ব্যক্তি পাগলীগঞ্জে অবস্থিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত মার্কেট কমপ্লেক্সে কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। গতকাল মধ্যরাতে হঠাৎ দিলীপ পণ্ডিতকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড়ায়। জানাযায়, মধ্যরাতে তার জ্বালা-যন্ত্রণা শুরু করায়, বাড়ির লোকেরা ছুটে আসে। প্রাথমিক শুশ্রূষা করার আগেই তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে এদিন সকালে বালুরঘাট থানার পুলিশ তার দেহ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে অ্যাম্বুলেন্সে। পরিবারের লোকেরা জানান, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সাপের কামড়ে মৃত্যু বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে। এদিন দেহটি ময়নাতদন্ত করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে ফিরে আসা ঐ মৃত শ্রমিকের লালারসের নমুনার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে তার সাপের কামড়ে মৃত্যু হলেও, এলাকায় আতঙ্ক রয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে নিয়ম মাফিক ক্ষতিপূরণ বা সাহায্য প্রদান করা হবে পরিবারকে।
বিরোধিরা যে বারংবার দাবি করছিলেন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে খোঁয়াড়ের মত রাখা হচ্ছে সেই দাবীকেই সিলমোহর দিয়ে গেল পন্ডিতের মৃত্যু।