ওয়েব ডেস্ক : নতুন করে চালু হয়ে যাচ্ছে সরকারি বেসরকারি অফিস কিন্তু গনপরিবহন ব্যবস্থার যথেষ্ট ঘাটতি। রাস্তায় বাসের সংখ্যা যথেষ্ট কম, চালু হয়নি মেট্রো। মধ্যবিত্ত চাকুরের ক্যাব ভাড়া করে অফিস যাওয়ার সঙ্গতি নেই। ফলে অফিস পৌঁছাতে কাল ঘাম ছুটছে। ১০টার অফিস ধরতে খোদ কলকাতা বা শহরতলির মানুষকেই বাড়ি থেকে বেরুতে হচ্ছে সকাল ৭টায় কারন বাসে ২০জনের বেশি ওঠা বারন। তাই বাসের লাইনেই ঘন্টার পর ঘন্টা কাবার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিলেন সহজ নিদান। জানিয়ে দিয়েছেন দেরি করলেও পড়বেনা লাল কালি তবে যেতে হবে অফিস।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারী কর্মচারীদের উদ্দেশ্যেও তিনি এদিন বলেন, “তাড়াহুড়ো করে, সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে অফিসে পৌঁছানোর দরকার নেই। প্রয়োজনে কিছুটা দেরিতে অফিসে যান, কিন্তু বিধি মেনে সুরক্ষিতভাবে যান । আর এই কারণেই আগামী এক মাস কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হলে সরকারি কর্মীদের হাজিরায় লালকালি পড়বে না। সবাই নিয়ম মেনে ফাঁকা বাসে যাতায়াত করুন।”
স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তির মহল সরকারি কর্মচারীদের। হুটোপুটি করে প্রান হাতে নিয়ে দৌড়ানোর ঝুঁকি থেকে রেহাই মিলল। তবে এই ঘোষনার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ আবার একটু দেরি করেও ঢুকতে পারে। তবে শেষ অবধি অফিস যেতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর বেসরকারি অফিসগুলির কর্তৃপক্ষের কোনও ঘোষণা নেই ফলে ওই কর্মচারীদের দুর্দশা টুকু বহালই থাকছে বলা বাহুল্য।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ীদের ঘরে ফেরানো প্রসঙ্গে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের জবাবে বলেন, বলেন, “অনেকেই বলছে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ঢুকতে না দিলে রাজ্যে এত লোক আসছে কী করে?”
তিনি জানান, পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের ভাড়ার পুরোটাই দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই অনেকে এসে পৌঁছেছেন। ১০ জুনের মধ্যে রাজ্যে আরও প্রায় ১০ লক্ষ পরিযায়ী ঢুকছে। সরকার যদি না চাইবে তাহলে এত মানুষ রাজ্যে কিভাবে ঢুকছে?। এদিন তিনি বিরোধীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। পাশাপাশি রাজ্যে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে গন্ডগোল বাধাতে চাইলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া আইনী ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারী দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘’করোনা মোকাবিলায় তৈরি রাজ্যের ২০০ কোটি টাকার ফান্ড প্রায় শেষ। তিনমাস ধরে কোনও রোজগার নেই রাজ্যের। নো আর্নিং, ওনলি বার্নিং। তাও রাজ্য কোষাগার থেকে ‘স্নেহের পরশ’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৫৭ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা করে দিয়েছে সরকার। কেন্দ্র কত দিয়েছে? সব নিজেরাই করেছি। তাও শ্রমিকদের উসকানো হচ্ছে।’’
পাশাপাশি, পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরার পর তাদের প্রত্যেককে যাতে ১০০ দিনের কাজের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও কুটীরশিল্পের কাজে লাগানো যায় সেদিকে জেলাশাসক ও বিডিও এসডিও-দের নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও এরপরেও খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, পরিযায়ীদের উদ্দ্যেশ্যে মাননীয়ার এতটা উদারতা দেখানোর পরও যে সকল শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই রাজ্যে ফিরেছেন আদেও কি তাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন নাকি সবটাই শুধুমাত্র কথার কথা তা এখন সময়ই বলবে।