ওয়েব ডেস্ক : একটা গোটা গ্রাম তাঁর নামে গ্রামের নাম রেখেছে। মহারাষ্ট্রের সেই গ্রাম মনে রেখেছে তাদের বন্ধুকে যিনি সেই গ্রামের বাচ্চাদের জন্য স্কুল গড়ে দিয়েছেন, তাদের স্কুলের ব্যাগ থেকে রেনকোট কিনে দিয়েছেন, বৃদ্ধদের জন্য ফি বছর পাঠিয়েছেন গরম পোশাক। অসুস্থ আর গর্ভবতীদের জন্য যে গ্রামে থাকত দিনরাতের আ্যম্বুলেন্স। সেই মানুষটির নামই ইরফান খান। দেশ যাকে হারিয়েছে কিছুদিন আগেই। কিন্তু কেউ কি জানত দীর্ঘ ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করার মধ্যেই তিনি নীরবে সাহায্য করে গেছেন দেশের করোনা আক্রান্তদেরও। ডান হাতে সাহায্য করতেন ইরফান যা কিনা তাঁর নিজের বাঁ হাতও জানতে পারেনি। তাঁর সেই মহতী দেশপ্রেমের কথা একে একে উঠে আসছে তাঁর মৃত্যুর পরই। যেমনটা উঠে এসেছিল সেই গ্রামের কথা। সেরকমই আরেক কাহিনী এবার প্রকাশ্যে উঠে এল। জানা গেল নিজের মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার সময়েও বন্ধ হয়ে যায়নি তাঁর মানব প্রীতি। জানা গেছে মৃত্যুর কয়েকদিন আগে পর্যন্তও করনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করে গিয়েছেন নীরবে।
এক সাক্ষাৎকারে ইরফানের খুব কাছের বন্ধু জিয়াউল্লাহ বলেন, ‘’করোনা মহামারির এই সময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য একটি ফান্ড গঠন করছিলাম। যখন আমরা তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলি তিনি সাহায্য করতে রাজি হন, এমনকি ইরফানও গরিব মানুষের জন্য ফান্ড গঠনে আমাদের সাহায্য করেছেন।”
জিয়াউল্লাহ জানান, নিয়ম করে প্রতিদিন দুস্থ মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা করে এসেছেন ইরফান। কিন্তু তার শর্ত কোনোভাবেই যেন তাঁর এই সাহায্যের কথা কেউ না জানে। কারন তার কাছে লোক জানিয়ে অসহায় মানুষদের সাহায্য করা ছিল মূল্যহীন।
তাঁর বন্ধু আরও বলেন, ‘’আজ এই কথা সকলের সামনে বলার কারণ, আজ ইরফান আমাদের মধ্যে নেই। তিনি মানুষ হিসেবে কেমন ছিল তা আপনাদের জানানো আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’মানুষ তাঁর পেশার জগতে বিখ্যাত হতেই পারেন কারন সেটাই তাঁর দক্ষতা প্রমানের জায়গা কিন্তু পেশার বাইরে দাঁড়িয়ে সে মানুষ যখন মাটির পৃথিবীতে নেমে সেই মানুষের পাশে দাঁড়ান যে মানুষের অংশগ্রহনেই তিনি বিখ্যাত। সেই মাটির মানুষের কান্না যখন তাঁকে আলোড়িত করে তখন তিনি হন মহান আর ইতিহাস তো স্বাক্ষী আছেই যে সব বিখ্যাত মানুষই মহান হননা, যেমনটা ইরফান খান একই সাথে বিখ্যাত ও মহান হতে পারেন।