Homeএখন খবরআপনি বাঁচলে বাপের নাম, পাশের গ্রাম আক্রান্ত ২ পরিযায়ী, খবর পেয়েই...

আপনি বাঁচলে বাপের নাম, পাশের গ্রাম আক্রান্ত ২ পরিযায়ী, খবর পেয়েই নিজেদেরকেই ঘিরে ফেলল পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রাম

নিজস্ব সংবাদদাতা : খবর এসেছিল দুপুরেই আর বিকালের মধ্যেই সারি সারি বাঁশ আর নারকেল দড়ি হাজির হয়ে গেল কেশপুরের নরসিংহপুরে। প্রথমে মনে হয়েছিল রাতারাতি বোধহয় বিয়ের ঠিক হয়ে গেছে কোনও মেয়ের। ‘উঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে লেগেছে’ বলে গ্রামের ছেলে ছোকরার দল বিয়ের মন্ডপ বানাতে তোড়জোড় শুরু করেছে। কিন্তু ভুল ভাঙল যখন গ্রামের চারপাশের সমস্ত রাস্তার মুখে শাবল দিয়ে গর্ত করে বাঁশ পুততে শুরু করল। সন্ধ্যা গড়াতেই গ্রামের ছোট বড় ১২টি রাস্তা ঘিরে ফেলেছে! কিন্তু খবর কী? জিজ্ঞেস করতেই জানা গেল ২পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পাশের গ্রাম পঞ্চমী ও সংলগ্ন আরও একটি গ্রামেও।পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার কেশপুর থানার নরসিংহপুরের এই আশঙ্কা সঠিক কিনা জানতে গিয়ে জানা গেল সত্যি সত্যি কেশপুরের ২পরিযায়ী শ্রমিকের দেহে করোনার অস্থিত্ব মিলেছে বৃহস্পতিবার রাতেই। আর সেই খবর পাওয়ার পরই ওই দুই শ্রমিককে শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রামের বড়মা কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে দুই পরিবারে সংস্পর্ষে আসা সদস্যদের। জানা গেছে আক্রান্ত ওই দুই শ্রমিকের একজন দিল্লি ও অন্যজন ফিরেছিলেন মহারাষ্ট্র থেকে। ফেরার পথেই তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় যার ফলাফল আসে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে।

নরসিংহপুরের যুবক ভোম্বল অধিকারী ও অমিত অধিকারী জানালেন, ‘দেখুন সরকার ওই গ্রামে কন্টেনমেন্ট জোন করুক, স্যানিটাইজেশন করুক কিংবা গোটা গ্রামকেই কোয়ারেন্টাইন করুক আমাদের কিছু বলার নেই এখন আমাদের শুধু নিজেদের গ্রামকে বাঁচাতে হবে। পালে পালে মানুষ ঘরে ফিরছেন। প্রতিটি গ্রাম ভরে যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকে। ঘরের মানুষ ঘরে ফিরুক কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের গ্রামের ওপর দিয়েই অনেকগুলি গ্রামের যাতায়ত। তাঁরা যাচ্ছেন, কখনও গাছের ছায়ায় কখনো আমাদেরই কারও বাড়ির দাওয়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। ফলে কোথায় কোন পথে করোনা আসবে বলা যাচ্ছেনা তাই ঝুঁকি নিচ্ছিনা। গ্রামের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অন্য সব গ্রাম থেকে আলাদা করে নেব আমাদের। আপাতত এই গ্রামে ঢোকা ও বেরুনো বারন। পরে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা।”

উল্লেখ্য এই নিয়ে জেলায় মোট ১১ জন পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্ত হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যার মধ্যে ৬ জন মহারাষ্ট্র ও ৫জন দিল্লিতে থেকে ফিরেছিলেন। শুক্রবারই জেলার পক্ষে ভাল খবর এসেছিল। কয়েকজন পরিযায়ী সহ সাতজন ফিরেছেন করোনা মুক্ত হয়ে। সেই হিসাবে বর্তমানে ৪ জন কোভিড পজিটিভ হিসাবে চিকিৎসাধীন, নতুন করে ২ জন আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসাধীন রইলেন ৬ জন।

RELATED ARTICLES

Most Popular